নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা আক্রান্ত একটি রোগীর জন্যও অক্সিজেন সাপোর্ট নেই বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তাসলিমা আনাম। অনুসন্ধানে জানা যায়, গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা আক্রান্ত হয়ে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় গত ১৬ জুন রাত ৮টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা নিতে যান গজারিয়া উপজেলার পুরান বাউশিয়া গ্রামের মোঃ বোরহান উদ্দিন। ওই সময় তাকে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের সাপোর্ট দিতে ব্যর্থ হন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক। পরে সংকটাপন্ন অবস্থায় তাকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। ওই সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তাসলিমা আনাম জানান, হাসপাতালে যে অক্সিজেন আছে এই অক্সিজেন দিয়ে করোনা রোগীদের সাপোর্ট দেয়া যায় না। আমাদের এখানে হাইফ্লো অক্সিজেনের সাপ্লাই দেয়া হয়না। এগুলো শুধু কোভিড ডেলিগেট হাসপাতালে দেয়া হয়। হাইফ্লো অক্সিজেনের সাপোর্ট পরবর্তীতে দেওয়া হবে কিনা এ বিষয়ে কিছুই তিনি বলতে পারেননি। করোনা আক্রান্ত বোরহান উদ্দিনের বড় ছেলে মোঃ রিপন মোল্লা জানান, আলহামদুলিল্লাহ, বাবা এখন অনেকটা ভালো আছেন। শুধু অক্সিজেনের জন্য করোনা আক্রান্ত হওয়া আমার বাবাকে কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে আনতে হয়েছে। হাসপাতালের কর্মীরাই একটি অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করে দিয়েছিলেন। নিজেদের প্রচেষ্টায় বাবাকে এখানে এনেছি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বাবাকে আনার সময় শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় আরও একটি রোগী মারা যেতে দেখেছি। আমি চাইনা অক্সিজেনের জন্য কারো স্বজনের যেন এমন মৃত্যু না হয়। এ সমস্যাটা আমাদের যে কারো হতে পারে। তাই যত দ্রুত সম্ভব জনস্বার্থে এই সমস্যাগুলো সমাধান করা প্রয়োজন। শুধু তাই নয়, আমার মা গত ২০ জুন করোনা পজিটিভ বলে জানতে পারি। বর্তমানে আমি আমার মায়ের সেবায় নিজ বাড়িতে এবং ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম লিটন বাবার সেবায় ঢাকায় আছেন। করোনার নাকি আইসোলেশন টিম গঠন করা হয়েছে, সেই টিমের কোন কার্যক্রম এই পর্যন্ত দেখিনি। এই বিষয়গুলোর উপর সকলের নজর দেয়া দরকার। এ বিষয়ে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান সাদী জানান, হাসপাতালের অক্সিজেন করোনা রোগীদের জন্য নয়, এটি আমি এই প্রথম জানলাম। কোন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এ বিষয়ে আমাকে জানাননি। আমাকে যদি না জানানো হয় তাহলে আমি কিভাবে ব্যবস্থা নেব? তাদের এখানে কি আছে, কি নেই সে ব্যাপারে তারা ভালো জানে। এ বিষয়ে গজারিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম জানান, আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে কথা বলে হাসপাতালের করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য অক্সিজেন সার্পোট নেই কেন তা জেনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলব। এই উপজেলার সচেতন মহল মনে করেন, এখনই বিদ্যমান এই সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধান না করলে করোনা মহামারী ঠেকাতে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ব্যর্থ হবে।