ক্রয়কৃত সম্পত্তি দখলের চেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার দক্ষিণ বেতকা গ্রামে সরকারি রাস্তা দখলের মিথ্যা অভিযোগে নাজেহাল বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন বেপারী। তিনি দাবী করে বলেন, ক্রয়কৃত সম্পত্তি পরিকল্পিতভাবে অবৈধ দখলের অভিযোগ করেছে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন বেপারী। উত্তর বেতকা মৌজার আর এস খতিয়ান নং-১১৬৭, আর এস দাগ নং-৫৫১ এর ১৬.৪৫ শতাংশ জমি নিজের ক্রয়কৃত সম্পত্তি বলে দাবী করেন তিনি। এই বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন বেপারী বলেন, জায়গাটি ক্রয়ের পূর্বে আমি একাধিকবার ম্যাপে বা কাগজপত্র দেখেছি। জমির পাশে কোনদিন সরকারী রাস্তা ছিলো না। শুধুমাত্র একটি পরিবার আমার জায়গার ওপর দিয়ে যাতায়াত করতেন। সেই বাড়িটি অবস্থিত আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নের মধ্যে অবস্থিত। যাতায়াতের জন্য তাদের বাড়ির সামনে দিয়ে সরকারি হালট রয়েছে। এতদিন তারা আমার ক্রয়কৃত সম্পত্তির ওপর দিয়ে যাতায়াত করত। কিন্তুু নাল জমি থাকায় বালু দিয়ে ভরাট করে আমি সেখানে স্থাপনা নির্মাণ করি এবং নিরাপত্তার স্বার্থে চারপাশে বেড়া দিয়ে বেষ্টনী নির্মাণ করি। এরপর হঠাৎ করেই পরিবারটি আমার ক্রয়কৃত সম্পত্তির ওপর দিয়ে অবৈধভাবে রাস্তা করে দেয়ার দাবী করেন। এই ব্যাপারে স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিরা আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা করতে চাইলে আমার প্রতিবেশী উত্তর পাশের বাড়িওয়ালা মনির শেখ এবং তার ভাইয়েরা রাস্তার জন্য জায়গা দিতে রাজী হয় না। ফলে নতুন করে রাস্তা নির্মাণের আর কোন উদ্যোগ হয়নি। এরপর গত ৩১ ডিসেম্বর সকালে পার্শ্ববর্তী আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নে উত্তর পাইকপাড়া গ্রামের আলি সিদ্দিকের স্ত্রী রেশমা বেগম ও তার সহযোগী মকিম মোল্লা, হামিদ শেখ, তরিকুল হাসান (লিউ) জোরপূর্বক আমার জায়গাটির বাউন্ডারির বেড়া ভেঙে ফেলেন। এতে আমার প্রায় ২৫ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং আমাকে নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদান করেন। এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন শেখ টঙ্গীবাড়ী থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের উত্তর পাইকপাড়া থেকে বেতকা চৌরাস্তা বাজার সংযোগ সড়কটি দিয়ে যাতায়াতের সরকারি কোন রাস্তা নেই। আলাউদ্দিন শেখ ক্রয়কৃত সম্পত্তির ভরাট করলে এই সংকট দেখা দেয়। তিনি ছাড়াও আরও কয়েকটি পরিবার সেখানে বসবাস করেন। আলাউদ্দিন বেপারী ছাড়াও সেই পরিবারগুলো রাস্তা দিতে রাজী নন। এই প্রসঙ্গে আলাউদ্দিন বেপারীর পার্শ্ববর্তী বাড়ির মালিক হাবিবুর রহমানের স্ত্রী বলেন, আমরা গরীব মানুষ। ছেলে-মেয়ে নিয়ে ৭৫ পয়েন্ট জায়গায় বসবাস করি। আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙে এই জায়গা দিয়ে রাস্তা নিতে চাইলে আমাদের ফাঁসি দিয়ে মরা ছাড়া কোন উপায় নাই। রাস্তার দাবী তোলা পরিবারের সদস্য রাকিব হাসান বলেন, আমরা আলাউদ্দিন বেপারীর স্থাপনার বেষ্টনীর কোন ক্ষয়ক্ষতি করি নাই। তার নির্মাণ করা কোন বেড়া ক্ষতি করিনাই। আমরা এই রাস্তাটি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যাতায়াত করছি। আমরা তার কাছে রাস্তাটি দেয়ার দাবী করছি। এ বিষয়ে বেতকা ইউনিয়নের পরিষদ চেয়ারম্যান আলম সিকদার বাচ্চু বলেন, আমার জানামতে মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন বেপারীর ক্রয়কৃত সম্পত্তির মধ্যে সরকারি কোনো রাস্তা নেই। পার্শ্ববর্তী আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বলেন, এই হালটটি দিয়ে একসময় মানুষ চলাচল করত। প্রকৃতপক্ষে আলাউদ্দিন বেপারীর জায়গায় কোন সরকারি রাস্তা নেই। তিনি যদি চান তাহলে মানুষের চলাচলের জন্য রাস্তা দিতে পারেন। এটি তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। টঙ্গীবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ হারুন অর রশিদ বলেন, তার স্থাপনা ধ্বংস এবং ভয়ভীতির প্রসঙ্গে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন বেপারী। তার ক্রয়কৃত সম্পত্তি মধ্যে সে যদি কোন রাস্তা দিতে রাজী না হয় তবে জোরপূর্বক কেউ রাস্তা করতে পারে না। এ ব্যাপারে আমরা উভয়পক্ষকে আইনের শরণাপন্ন হতে পরামর্শ দিয়েছি।