নিজস্ব প্রতিবেদক
তিন বছরেও নিষ্পত্তি হয়নি মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার ব্যবসায়ী আলী হোসেন শেখের হত্যা মামলা। বিচার চেয়ে বিভিন্ন দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও মামলা ঝুলে থাকায় হতাশ নিহত আলী হোসেনের পরিবারের সদস্যরা।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২১ খালের ২৭ অক্টোবর গভীর রাত, টঙ্গীবাড়ী বড়লিয়া ফার্নিচারের দোকান থেকে তৈলকাই গ্রামের আলী হোসেন, ছেলে মেহেদী হাসান শুভ ও ছোট ছেলে বাড়ি ফিরছিলো। পথে বড়ই-বালিগাঁও রাস্তার তৈলকাই সেতু সংলগ্ন এলাকায় ডাকাতের নির্মম প্রহারে মৃত্যু হয় আলী হোসেন শেখের। তবে প্রাণ নিয়ে বেঁচে আসে শুভ ও তার ছোট ভাই। ঝুলন্ত রশি দিয়ে গতিরোধ করে ডাকাত দল পিতা ও পুত্রকে বেঁধে ফেলে এবং তাদের কাছে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। কৌশলে শুভ ছুটে এসে চিৎকার ও হাঁকডাক দিলে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসে এবং তার বাবাকে বাধা অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছাতেই মৃত্যু হয় তার। এ ঘটনায় টঙ্গীবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন মেহেদী হাসান শুভ। অজ্ঞাত আসামি করা হয় ৫/৬ জনকে। যার মামলা নম্বর- ১৫ /২০২১। তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোল্লা সোহেব আলী মামলাটি প্রাথমিক তদন্ত শেষে কোর্টে পাঠালে পিবিআইয়ের উপর তদন্ত ভার দেয়া হয়। তিন বছর পার হবার পরেও মামলার কোন অগ্রগতি হয়নি। এমনকি বাদী শুভ নিজে বহুবার পিবিআই ও মুন্সীগঞ্জ আদালতে গেলেও নিষ্পত্তি হয়নি হত্যা মামলাটির।
এ বিষয়ে নিহতের ছেলে শুভ বলেন, আমার পিতা হত্যার মামলাটি থমকে আছে। আমি এবং আমার বৃদ্ধ মা বহুবার আদালত এবং পিবিআই অফিস দৌড়ঝাপ করেছি, কিন্তু কোন সুফল দেখতে পাচ্ছি না। তিনি আরও বলেন, সেদিন রাতে আমি, আমার বাবা ও আমার ছোট ভাই মোটরসাইকেলে ছিলাম। রশি লাগিয়ে মোটরসাইকেলটি গতিরোধ করে ডাকাতির ঘটনা ঘটায়। ডাকাতরা আমার আব্বাকে পানিতে ফেলে কাঠের ডাসা ও লোহার রড দিয়ে গুরুতর জখম করে। আমরা দুই ভাই দৌড়ে না পালালে আমাদেরও হত্যা করা হতো। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। নইলে আমরা যে এত রাতে ঢাকা থেকে বাড়িতে আসবো এটা কারো জানার কথা নয়।
শুভর মা জানান, আমার স্বামী মারা যাবার পর আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। ছেলেরা কাজ করে। আর আমিও অসুস্থ। তাই আমাদের মামলার পেছনে দৌড়ানোর মত সময় বা টাকা কোনটাই নেই। আমরা চাই, সত্য প্রকাশিত হোক। হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হউক।
এ বিষয়ে পিবিআই কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে।