নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীতে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই অবৈধভাবে রাস্তার উপরে ড্রেজার মেশিনের পাইপ দিয়ে জনদূর্ভোগ ও বালু দিয়ে কৃষিজমি ভরাটের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। উপজেলার জশলং ইউনিয়নের সেরাজাবাদ গ্রামের আর.এস ৮৩৭, ৮৩৮, ৮৩৩ ও ৮৩৬ দাগের মোট ১ একর ৪৯ শতাশ ফসলি জমিটি ভরাট করছে রানা হালদার। ড্রেজারের সাহায্যে বালু দিয়ে ফসলি জমি অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ভরাট করলেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। সরেজমিনে দেখা যায়, দীঘিরপাড়-মুন্সীগঞ্জ সড়কের উপর ড্রেজারের পাইপ বসিয়ে সে পাইপ দিয়ে বালু ভরাট করা হচ্ছে। সেরজাবাদ-বাঘিয়া রাস্তার পাশের জমিটি স্ক্যাভেটর দিয়ে বাঁধ দিয়ে বালু ভরাট করা হচ্ছে। রাস্তার উপরে পাইপের কারণে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে অনেকেই। অটোমিশুকগুলো উল্টে যাওয়ার উপক্রম হয়ে যায়। প্রাইভেট কারগুলোর নিচের অংশ আটকে যায়। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন এই রাস্তা দিয়ে চলাচলরত মানুষ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী জানায়, রানা হালদার ড্রেজার দিয়ে তার ফসলি জমিটি ভরাট করছে। তার জমি ভরাট করার জন্য ড্রেজারের পাইপগুলো অনেকের জমির উপর দিয়ে আসছে। এতে করে আগামি বছর আমাদের জমির ফসল উৎপাদন কমে যাবে। আমাদের জমির উপর দিয়ে পাইপ নিতে বাঁধাও দিতে পারছি না কারণ ভরাটের কাজ করছে কামারখাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ড্রেজার ও বালু ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন হালদার। তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস আমাদের কারো নেই। তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলে বা প্রতিবাদ করে কখনোই ঠিক থাকতে পারবে না। তাই আমাদের উপর করা এই অত্যাচার আমরা নিরবেই সহ্য করছি। এছাড়া এভাবে ফসলি জমি ভরাট করতে থাকলে আমাদের এলাকার ফসলি জমি একবারেই বিলীন হয়ে যাবে। ইজিবাইক চালক আবুল হোসেন বলেন, রাস্তার উপরে পাইপ দেয়ায় আমাদের চলাচলে অনেক কষ্ট হয়। বিশেষ করে বৃষ্টি হলে ও রাতের বেলাতে অনেক সময় দ্রুত গাড়ি চালাতে গেলে আমাদের দূর্ঘটনার শিকার হতে হয়। রোগী নিয়ে যেতে তো আরো বেশি কষ্ট হয়। রাস্তায় এভাবে পাইপ দেয়ায় আমরা অনেক সমস্যায় আছি। সিপাহীপাড়া মোড় থেকে দীঘিরপাড় পর্যন্ত এমন ড্রেজারের পাইপ প্রায় ৬/৭ জায়গাতেই রয়েছে। এ বিষয়ে জমির মালিক রানা হালদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জমিটা ফসলি হলেও কাগজে-কলমে ভিটা। আর আমি তো এই জমিটা বিক্রি করে দিয়েছি। জমির বর্তমান মালিকের ফোন নাম্বার চাইলে তিনি দিতে রাজি হননি। এ বিষয়ে জানতে বালু ব্যবসায়ী কামারখাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন হালদারের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও সে রিসিভ করেনি। জশলং ইউপি চেয়ারম্যান আলমাস চোকদার বলেন, সারাদেশেই এভাবে রাস্তার উপর দিয়ে পাইপ দিয়ে জমি ভরাট হচ্ছে। আমি দেখেছি, সেরজাবাদসহ আশেপাশে অনেকেই জমি ভরাট করছে। তবে এখনো কেউ আমার কাছে এই সমস্যা নিয়ে কোন অভিযোগ করেনাই। এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পারভীন খানম জানান, সড়কের উপর দিয়ে ড্রেজারের পাইপ নেওয়া এবং বালু ফেলে ফসলি জমি নষ্ট করার বিষয়টি ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।