নিজস্ব প্রতিবেদক
কয়েক দিনের থেমে থেমে বর্ষণে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা শহরে জলবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। ছোট্ট মফস্বল উপজেলা শহরে এ ধরণের জলাবদ্ধতায় এখানকার মানুষ পড়েছে বিপাকে। জলাবদ্ধতার পাশাপাশি প্রধান সড়কে খানা-খন্দ। রাস্তার জলাবদ্ধতার পানিতে এখানকার মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে নানা রকমের সমস্যা। কয়েকদিন থেমে থেমে ভারি বর্ষণ ও মাঝে মাঝে ঝিরঝির বৃষ্টিতে নাকাল অবস্থা টঙ্গীবাড়ী উপজেলার সব ধরণের মানুষের। জরুরী প্রয়োজনে যারা বাড়িতে বের হচ্ছেন তারাই এখন এ পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন। সামান্য বৃষ্টিতে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকের আশপাশে জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে। তাতে এ সময় কোন ব্যক্তি বা লোকজন টঙ্গীবাড়ী উপজেলা পরিষদে যেতে চাইলে তার পায়ের জুতা হাতে ও প্যান্ট হাঁটুর নিচে উঠিয়ে তারপরেই বৃষ্টির পানি মাড়িয়ে পায়ে হেঁটে সেখানে যেতে হচ্ছে। তবে অনেকেই আবার বৃষ্টির পানি না ছুঁইয়ে মিশুক কিংবা অটোতে করেও এ পানি পার হচ্ছেন। তবে এ বৃষ্টির সময় সেখানে মিশুক কিংবা অটো পানি পারাপার করতে হাক ডাক দিতে শোনা যায়। মিশুক কিংবা অটো চালকরা পানি পারাপারের সময় যাত্রীদের কাছ থেকে যে যার কাছ থেকে যেমনটা পারে তেমন পয়সা নিয়ে যাচ্ছে। তবে শোনা যায় এ পারাপারে ১০ টাকা থেকে ২০ টাকাও আদায় করা হচ্ছে বৃষ্টি পড়ার ধরণ বুঝে। টঙ্গীবাড়ী উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকের কূল ঘেঁষে রয়েছে জেলা পরিষদের একটি মার্কেট। এ মার্কেটের কাছ দিয়ে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকে যেতে কয়েকটি ইট বিছানো আছে। তবে বৃষ্টির জলাবদ্ধতার অল্প পানি থাকলেই সেই পথ দিয়ে কোনভাবে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা পরিষদের ভেতরে যাওয়া যায়। বেশি বৃষ্টি হলে সেই ইট কোন কাজে লাগে না বলে এ পথে পারাপারে লোকজনরা জানিয়েছে। লাগাতার কয়েক দিন কিংবা মুষলধারে বৃষ্টি হলেই এখানে দীর্ঘক্ষণ বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা থাকে। পশ্চিমের বালিগাঁয়ের রাস্তা টঙ্গীবাড়ী উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকের রাস্তা থেকে কিছুটা উঁচু থাকায় বৃষ্টিতে রাস্তার পানি গড়িয়ে এখানে চলে আসায় এ পথে মূলত জলাবদ্ধতা দেখা দেয় বলে এখানকার মানুষ মনে করছেন। এছাড়া টঙ্গীবাড়ী উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকের পশ্চিমে রয়েছে কাজী মার্কেট। সেখানকার রাস্তাটিও একটু উঁচু থাকায় এখানে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। টঙ্গীবাড়ী উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকের জেলা পরিষদের মার্কেট থাকাসহ একাধিক কারণে এখান থেকে দ্রুত পানি সরে যেতে পারছে না। তাই অনেকটা সময় ধরে এখানে জলাবদ্ধতার পানি আটকে থাকে। এদিকে এ ধরণের পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার পথে। এখানকার জলাবদ্ধতা একটু ভিন্ন রকমের। এখানে বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা কয়েকদিন ধরেই থাকে বলে শোনা যাচ্ছে। এ পথে বৃষ্টির পানি সরে যাওয়ার কোন পথ না থাকায় এমনটা হচ্ছে বলে এখানকার মানুষ মনে করছেন। তবে এ পথের অবস্থা বছরের পর বছর ধরে চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিকারের ব্যবস্থা না নেয়ায় এ পথে চলাচলকারী রোগীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। প্রধান সড়ক থেকে নামলেই এ পথে এক কিলোমিটার রাস্তা এমন অবস্থা বিরাজ করছে। জলাবদ্ধতার কারণে এ পথের রাস্তাটিও খানা-খন্দে ভরে উঠেছে। জলাবদ্ধতার সময় অনেকেই মিশুক কিংবা অটোর সাহায্য নিয়ে থাকেন। আবার অনেকেই ওষুধের দোকানের বারান্দা দিয়েও এ পথ পাড়ি দিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে জলাবদ্ধতা বেশি থাকলে সেই আশাও গুঁড়ে বালিতে পরিণত হয়ে থাকে। এ পথের পূর্ব দিকে সোনারং টঙ্গীবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদসহ ব্যক্তি মালিকানায় একাধিক ভবন থাকায় এ রাস্তার পানি কোনভাবেই এ পথ থেকে সরে যাচ্ছে না। তবে এ ভবনগুলোর আরো পূর্ব রয়েছে টঙ্গীবাড়ী খাল। এ রাস্তা অনেকটা উঁচু করে নির্মাণসহ ড্রেনের পানি খালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হলে এর সমাধান পাওয়া সম্ভব বলে এখানকার মানুষ মনে করছে। এ পথের পশ্চিমে রয়েছে বেশিরভাগ ওষুধের দোকান। সেগুলোর পাশে রয়েছে বড় ধরণের একটি পুকুর। বৃষ্টির কারণে সেই পুকুরে পানি বাড়ার কারণে এখানকার পানি কোনভাবেই আর সরে যাচ্ছে না বলে অনেকেই মনে করছেন। এ কারণে এখানে জলাবদ্ধতার পানি অনেকটা সময়ই থেকে যাচ্ছে। এদিকে টঙ্গীবাড়ী থেকে কলেজ রোডে যাওয়ার পথে আধা কিলোমিটার রাস্তায়ও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। টঙ্গীবাড়ী প্রধান সড়কের দক্ষিণে যাওয়ার পথ হচ্ছে কলেজ। এ পথের পানি সহসা কোথাও সরে যেতে না পারার কারণে রাস্তায় বাড়ি যানবাহন চলাচল করায় রাস্তার একাধিক স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আর সেখানেই স্থায়ীভাবে বৃষ্টির পানিতে বর্তমানে জলাবদ্ধতায় রূপ নিয়েছে। গর্ত এতো বড় যে সেখানে ছোট ছোট যানবাহন নাগরদোলার মতো চলাচল করে। অনেক যানবাহন গর্ত এড়িয়ে চলতে গিয়ে ভালো রাস্তাও আরো খারাপ করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে এ রাস্তা দিয়ে কোনভাবেই আসলে মানুষের চলাচলে উপযোগী নয়। রাস্তার এ অবস্থা থাকার কারণে অনেক পথচারী ঘুর পথে বাজারের ভিতরের রাস্তা কিংবা একাধিক মার্কেটের ভেতর দিয়ে চলাচল করছে।