নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ জেলা শহরের ঐতিহ্যবাহী স্কুলগুলোর মধ্যে এ.ভি.জে.এম (আলবার্ট ভিক্টোরিয়া যতীন্দ্র মোহন) গভর্ণমেন্ট গার্লস হাই স্কুল একটি অন্যতম বিদ্যাপীঠ। বর্তমানে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষক সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এটি ১৮৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। দানবীর স্বর্গীয় যতীন্দ্র মোহন স্কুলটি প্রতিষ্ঠার জন্য জমি দান করেন। স্কুলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ অঞ্চলের নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে অপরিসীম ভূমিকা রাখতে শুরু করে। একশ ত্রিশ বছর অতিক্রান্ত স্কুলটি ঘিরে রয়েছে নানা ধরনের ঐতিহ্যময় গল্পকথন। এই প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে অনেক নারী শিক্ষার্থী দেশের গন্ডি পেরিয়েও বিশ্বের নানা জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয়ে দেশকে করেছে উজ্জ্বল। এ স্কুলের ছাত্রীরা সাহিত্য, সংস্কৃতি, ক্রীড়াঙ্গন, স্কাউটিং, সাংবাদিকতা, রাজনীতি থেকে আরম্ভ করে নানা ক্ষেত্রে কৃতিত্বের সাথে অবদান রেখেছে। শুরু থেকে নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে যে অভাবনীয় অবদান রেখেছে তা স্মরণীয় হয়ে থাকার মতো। প্রায় ১৮শত ছাত্রী অধ্যায়নরত। এই প্রতিষ্ঠানটির অতি পুরনো ভবনটি অকেজো হওয়ায় ভেঙ্গে ফেলা হয় কয়েক বছর আগে। এ.ভি.জে.এম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের উত্তর পাশের মনোরম পরিবেশে একটি বাঁধা পুকুর স্কুলটির সৌন্দর্য অনেক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এর পূর্ব পাশে রয়েছে ইদ্রাকপুরের কেল্লা। শুরু থেকে স্কুলটিতে ভালো ফলাফলের একটা সংস্কৃতি রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ারুল হক জানান, ২০১৯ সালের ২০ আগস্ট থেকে ২০২২ সালের ৯ জুন পর্যন্ত এই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২২ সালের ৯ জুন তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি পান বলে জানান। তিনি জানান, স্কুলের ফল বিপর্যয় থেকে আরম্ভ করে নানা ধরনের সমস্যা মোকাবেলা করতে হচ্ছে তাকে। তারপর করোনা বিপর্যয়ের কারণে ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালে লটারির মাধ্যমে ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রী ভর্তির প্রক্রিয়ার কারণে মেধা যাচাইয়ের সুযোগ না থাকায় ভালো ছাত্রী ভর্তি করা সম্ভব হচ্ছে না বিধায় ছাত্রীদের ভালো রেজাল্ট করানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ারুল হক জানান, স্কুলটিতে শিক্ষক সঙ্কট রয়েছে। এখনো ৮ জন শিক্ষক সঙ্কট রয়েছে। এর মধ্যে বাংলায় ১ জন, ইংরেজিতে ২ জন, ইসলাম ধর্মে ২ জন, ভূগোলে ১ জন, বায়োলজিতে ১ জন ও করণিকের পদ খালি রয়েছে। তাছাড়া সহকারি প্রধান শিক্ষকের ২টি পদও দীর্ঘদিন যাবৎ খালি রয়েছে। স্কুলের অভ্যন্তরে ছাত্রীদের বিজ্ঞান চর্চাকে ত্বরান্বিত করার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার নামে একটি বিজ্ঞানাগার ২ বছর পূর্বে উদ্বোধন করা হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, অবসরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যাপীঠকে জীবনের বাকি সময় দিয়ে অভীষ্ঠ লক্ষ্যে নেয়ার স্বপ্ন দেখছি।