নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে সরকারঘোষিত অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু ভরাট বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। এ কারণে বর্তমানে চাষাবাদের কৃষিজমি পড়েছে হুমকির মুখে সাথে পরিবেশও তার ভারসাম্য হারাচ্ছে। অবৈধ ড্রেজারে বালু ভরাটের এ ব্যবসায় সাধারণ লোক মাটির মাপের সঠিক হিসাব বুঝতে না পারায় ব্যবসাটি অধিক লাভজনক তালিকায় রয়েছে। অল্পসময়ে বেশী লাভের আশায় এলাকার বখাটে থেকে শুরু করে রাজনৈতিক পদধারী ব্যক্তিরাই এ ব্যবসায় ঝুঁকছেন বেশী। যে কারণে জমিতে বালু ভরাট করার পরে জমির মালিকের কাছে থেকে বালু ভরাটের টাকা উত্তোলনের সময় ঝগড়া-বিবাদের ঘটনারও জন্ম হয়। অনেক সময় বালুর হিসাবে গড়মিলের ঘটনাও ঘটে। কিন্তু অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট প্রভাবশালী হওয়ায় তখন আর কিছুই করার থাকে না। পরে তারা ড্রেজার ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের দাবীকৃত অর্থ পরিশোধ করতে বাধ্য হন। শ্রীনগর উপজেলার এমন কোন ইউনিয়ন নাই যেখানে ড্রেজার লাগিয়ে বালু ফেলে কৃষি জমি ভরাট করা হচ্ছে না। তারা এতোটাই বেপরোয়া যে সরকারী কোন নিষেধাজ্ঞাই তাদের মানানো সম্ভব হয়নি। এমনকি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশনা, কোন প্রকার কৃষিজমি ভরাট করা যাবে না – কথাটিও তারা কর্ণপাত করেনি। খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, শ্রীনগর সিংপাড়া সড়কের কল্লিগাঁ ব্রীজের পশ্চিম পাশের উত্তরের গাইডওয়াল লাগোয়া স্থানে ট্রাক দিয়ে বালু এনে এখানে ফেলে রাখা হয়। পরে পানি মিশিয়ে ড্রেজার দিয়ে আশপাশের একাধিক জমি ভরাট করা হচ্ছে। এ কারণে কোটি টাকার ব্রীজটির গোঁড়ার মাটি সরে গিয়ে ব্রীজের গোঁড়া ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া সিংপাড়া থেকে শ্রীনগর চৌরাস্তা পর্যন্ত রাস্তার উভয়পাশের কৃষিজমিতে হাউজিং কোম্পানির সাইনবোর্ড লাগিয়ে ইতোপূর্বে বিস্তীর্ণ এলাকা ভরাট হয়েছে যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। শ্রীনগর খালের বেজগাঁও অংশে ড্রেজার লাগিয়ে কৃষিজমি ভরাট করা হচ্ছে। শ্রীনগর দোহার সড়কের উভয়পাশে (বাইপাস থেকে শুরু করে কামারগাঁও হরিসভা মন্দির পর্যন্ত) একরের পর একর কৃষিজমি ভরাট করা হয়েছে। নতুনভাবে আরও জমি ভরাট করা হচ্ছে। দোহার রোডের বালাশুর বৌবাজার, ভাগ্যকুলের বালাশুর চৌরাস্তা, বটতলা, মধ্য কামারগাঁও ভূইয়া বাড়ীর সামনের পিচঢালা সড়কের নীচ দিয়ে গর্ত করে মোটা পাইপ বসিয়ে ড্রেজারের পাইপ টানা হয়েছে। যে কারণে রাস্তাটির একাধিক স্থানের মাটি দেবে গেছে। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রবীণ এক আওয়ামীলীগ নেতা আফসোস করে বলেন, দলীয় পরিচয় দিয়ে অবৈধ ড্রেজার ব্যবসা করে রাস্তা কেটে পাইপ বসিয়ে যারা দেশের সম্পদ নষ্ট করছে তারা দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করে ব্যক্তিগতভাবেই শুধু লাভবান হচ্ছেন। তারা নিরবে রাজনৈতিক দলটির ক্ষতি করে যাচ্ছেন। একজন স্কুল শিক্ষক বলেন, অবৈধ এ ড্রেজারগুলো যদি দ্রুত বন্ধ করা না যায় তবে অল্প সময়েই শ্রীনগর বালুর মরুভূমিতে পরিণত হবে। তখন স্থানীয়ভাবে ধান ও মাছের ঘাটতি দেখা দিবে। পরিবেশ বৈরী হয়ে পড়বে।