নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের চান্দেরচর গ্রামে এক যুবককে গাছের সাথে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানবিক নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রেমিক সাইফুল ইসলাম রাজন সিরাজদিখান ইছাপুরা স্বাস্থ্য কমপ্লে¬ক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। নির্যাতনে তার দুটি পা ভেঙ্গে গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড ইউপি সাবেক সদস্য জয়নাল মেম্বারের নাতনির সাথে প্রেম করে আসছিল সাইফুল ইসলাম রাজন নামের ওই যুবক। ৩ বছরের প্রেমের সম্পর্ক গভীর হলে তারা দুজনে পালিয়ে যায়। তখন বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় প্রেমিকার পরিবার। সাইফুলের লেখাপড়া ও পারিবারিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় আপত্তি ওঠে প্রেমিকার পরিবারের পক্ষ থেকে। মোবাইল ফোনে গত ৮ জানুয়ারি বালুচর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের জয়নাল মেম্বারের বাড়িতে সাইফুলকে ডেকে নিয়ে চালানো হয় বর্বরোচিত নির্যাতন। অমানসিক নির্যাতন করায় দু’দিন ধরে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে ঐ যুবক। জানা গেছে, গত শনিবার বিকেল ৪টার দিকে বালুচর ২নং ইউপির সাবেক ওয়ার্ড সদস্য মো. জয়নালের সহযোগীতায় মো. আলমগীর তার বাড়িতে সাইফুলকে ডেকে নিয়ে পূর্বপরিকল্পনা মতো গাছের সাথে বেঁধে আদিযুগের বর্বরোচিত কায়দায় অমানসিক নির্যাতন চালায়। শত শত মানুষের সামনে দুই ঘন্টাব্যাপী নির্যাতন করা হয়। পরে এলাকাবাসী সিরাজদিখান থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে সাইফুল ইসলাম রাজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লে¬ক্সে ভর্তি করে। আহত সাইফুল ইসলাম রাজনের নানা জজ মিয়া বলেন, আমার নাতীর অবস্থা বর্তমানে খারাপ। আমরা তাকে সুচিকিৎসার জন্য ঢাকা হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নিয়ে যাবো। তারা আমার নাতীকে পরিকল্পিতভাবে ফোন করে তাদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে অমানবিকভাবে অত্যাচার নির্যাতন করেছে। তার দুটি পা ভেঙ্গে দিয়েছে। মাথায় আঘাত করে দুই স্থানে বড় বড় গর্ত করেছে। এছাড়া লাঠিসোটা দিয়ে মেরে শরীরে নিলাফোলা জখম করেছে। দু’দিন ধরে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে আমার নাতী। আলমগীরের নেতৃত্বে ভাই ভাতিজারা মিলে আমার নাতীকে হাত পা বেঁধে আছর নামাজ ওয়াক্ত থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পিটিয়েছে। জানিনা আমার নাতীর ভাগ্যে কি আছে ? আমি এর সঠিক বিচার চাই। অভিযুক্ত মো. আলমগীর বলেন, গত দুইমাস আগে আমার ভাতিজিকে অপহরণ করছে। পরে পুলিশ গিয়ে আমার ভাতিজিকে উদ্ধার করে আনছে। আর ছেলেকে আমরা জেলে দিয়ে দিছি। হাইকোর্ট থেকে জামিনে এসেছে এক সপ্তাহ আগে। এসেই আমাদের হুমকি দিয়েছে। পরে শুক্রবার দিন খোঁজখবর নিয়ে দেখেছে আমাদের বাড়িতে লোকজন কম আছে। এ দেখে লোকজন নিয়ে ভাতিজিকে উঠিয়ে নিতে আসে। তখন আত্মীয়-স্বজনরা ধরে তাকে গণধোলাই দিয়েছে। এ ব্যাপারে সিরাজদিখান থানার ওসি (তদন্ত) আজগর হোসেন বলেন, প্রেমসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এক যুবককে মারধর করা হয়েছে। ওই ঘটনায় ওই যুবকের পিতা আবুল হোসেন বাদী হয়ে ৭ জনকে আসামি করে সিরাজদিখান থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। আসামিদের ধরতে একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। আসামিরা পলাতক রয়েছে।