নিজস্ব প্রতিবেদক
হারিয়ে যাচ্ছে বিক্রমপুর তথা মুন্সীগঞ্জের ঐতিহ্য মাটির চুলায় রান্না করা খাবার, স্বাদ। মাটির তৈরি চুলার কথা মনে করলেই মনে পড়ে যায় দাদি-নানি ও মায়ের হাতের লাকড়ি দিয়ে রান্নার কথা। তাদের সেই রান্নার স্বাদ যেন জিভে পানি এনে দেয়। বর্তমানে কমে আসছে এই মাটির চুলার ব্যবহার। শহরাঞ্চলে এ চুলার দেখা মেলে না বলেলেই চলে। তবে গ্রামাঞ্চলে এখনও বেশিরভাগ বাসায় রান্নার কাজে মাটির চুলা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। গ্রাম বাংলার রূপে বিমোহিত হয়ে জীবনানন্দ দাশ লিখেছিলেন, “বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর। অন্ধকারে জেগে উঠে ডুমুরের গাছে, চেয়ে দেখি ছাতার মতন বড়ো পাতাটির নিচে বসে আছে। আমাদের বাংলার চির সবুজের দৃশ্য মোড়ানো প্রকৃতি যে কত সুন্দর আর প্রাণ জুড়ানো তা শহরে থেকে বোঝা সম্ভব নয়। গ্রাম বাংলার প্রকৃতি দেখে প্রাণ সজীব ও সতেজ হয়ে যায়। আলাদা একটা অনুভূতি বিরাজ করে মনে। যারা শহরে বসবাস করেন অনেকের নানা বা দাদা বাড়ি হয়তো গ্রামে। তারা ছুটিতে গ্রামে গেলে সেখানকার নির্মল বাতাস আর সবুজ প্রকৃতিতে নিজেকে সতেজ করে নিতেন। আর সেখানে মাটির চুলায় রান্না করা খাবার খেয়ে তৃপ্তি পেতেন। তবে এখন বিদ্যুৎ আর গ্যাসের যুগে মাটির চুলা প্রায় হারিয়ে গেছে। আবার মুন্সীগঞ্জে পদ্মা নদীতে বসতভিটা বিলীন হয়ে যাওয়ার পরে অনেকের নানা বা দাদা বাড়ি শহরেই। তাই হয়তো কোনোদিন মাটির চুলায় রান্না করা খাবারের স্বাদই নিতে পারেননি। মাটির চুলা তৈরিতে প্রথমে এঁটেল মাটি, তুষ ও পানি দিয়ে মন্ড তৈরি করা হয়। থালা বা গামলার ওপর মাটির মন্ড রেখে হাত দিয়ে ধীরে ধীরে চুলার আকৃতি করা হয়। তারপরে জায়গা মতো মাঝ বরাবর গোল করে কেটে চুলার মুখ তৈরি করা হয়। মাটির ভেজা ভাব শুকিয়ে গেলে তখন ইচ্ছে মতো রান্না শুরু করা যায়।