নিজস্ব প্রতিবেদক
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে গজারিয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পাড়া, মহল্লার চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সব জায়গাতেই সরব আলোচনায় মেতে উঠেছেন সাধারণ মানুষ। মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ থেকে কারা মনোনয়ন পাচ্ছেন। তার চেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বলে এসব বিষয়ে জানা গেছে।
জানা যায়, আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে পাড়া, মহল্লার চায়ের দোকানগুলোতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বর্তমান সরকারের পক্ষে বিপক্ষে চলছে বিতর্ক। এক পক্ষ বলছে, বর্তমান সরকারের শাসনামলে গজারিয়ায় যে উন্নয়ন হয়েছে তা আগে কখনও হয়নি। আরেক পক্ষ বলছে, গজারিয়ায় দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন হয়নি। আগামী নির্বাচনে যোগাযোগ বড় একটি ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর জন্য। গজারিয়া উপজেলাকে বিচ্ছিন্ন ও বিভক্ত করে রেখেছে মেঘনা নদীর শাখা ফুলদী নদী। এই নদীতে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দুই দশকেও শুরু হয়নি সেতুর নির্মাণ কাজ। নদী পারাপারে এখনও খেয়া নৌকাই ভরসা উপজেলার অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের।
অপরদিকে গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের সমতল ভূমি থেকে ১২টি গ্রামকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে মেঘনা নদীর শাখা কাজলী নদী। হাজার হাজার মানুষের নদী পারাপারে একমাত্র ভরসা ইঞ্জিনচালিত ট্রলার। এ গ্রামগুলোর মানুষের যাতায়াতের সার্বিক সুবিধার্থে কাজলী নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি করে আসলেও দুই যুগেও সম্ভব হয়নি কাজলী নদীতে একটি সেতু নির্মাণ করা। আগামী নির্বাচনে ফুলদী ও কাজলী নদীতে সেতু না হওয়া একটি বিশাল ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে জানান সাধারণ ভোটাররা।
এদিকে উপজেলায় দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে বলে দাবি করে আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতা জানান, নদীবেষ্টিত অবহেলিত উপজেলার অধিকাংশ মানুষ একসময় মাছ আর কৃষির উপর নির্ভর করতো। বর্তমান সরকারের শাসনামলে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা এবং কাঁচা-পাকা রাস্তা নির্মাণের ফলে যোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক উন্নয়ন হয়েছে। এ উপজেলার মানুষ বহু ধরনের পেশায় নিজেদের যুক্ত করে জীবন বদলে নিচ্ছে। একসময়ের অবহেলিত গজারিয়া উপজেলায় বদলে গেছে উন্নয়নের দৃশ্যপট। এখন আর আগের গজারিয়া নেই। কর্ম করার জন অন্য জেলা ও উপজেলা থেকে মানুষ গজারিয়াতে আসে। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে চায় সাধারণ মানুষ ।
তবে সচেতন মহল বলছেন, দেশের সার্বিক উন্নয়নে ভাল যোগাযোগ ব্যবস্থার কোন বিকল্প নেই। কিন্তু সেই যোগাযোগ ব্যবস্থায় চরম নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে বসবাস করছেন গজারিয়ার প্রায় পৌনে দুই লাখ মানুষ। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যোগাযোগ ব্যবস্থা বড় ফ্যাক্টর হয়ে সামনে আসতে পারে বলে মনে করছেন তারা।