নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জে উৎসবমুখর শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জের ৬ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এসব সরঞ্জাম ভোটকেন্দ্রগুলোতে পাঠানো হয়। কেন্দ্রগুলোর প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা এসব সরঞ্জাম সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে বুঝে নিয়েছেন। মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুল হুদা ও সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম উপস্থিত থেকে নির্বাচনী সরঞ্জাম প্রদান করেন। আজ রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভোট গ্রহণ চলবে। মুন্সীগঞ্জ জেলার ৩টি নির্বাচনি আসনের মোট ৪৬৯টি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৪৬৯ কেন্দ্রের মধ্যে ৩৩৯টি ঝুঁকিপূর্ণ বা বেশি গুরুত্বপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে অতিরিক্ত পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। জেলায় শৃঙ্খলা রক্ষায় মোট সাড়ে ৭ হাজার সদস্য মাঠে থাকবে। এছাড়া কোন রাজনৈতিক দল নির্বাচন ভন্ডুলের চেষ্টায় বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান পুলিশ সুপার আসলাম খান। জেলায় মোট সাড়ে ৭ হাজার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্য নিয়োজিত রয়েছে। আনসার সাড়ে ৫ হাজার, বিজিবি ৯ প্লাটুন, ১৩ শতাধিক পুলিশ। মুন্সীগঞ্জের ৩টি সংসদীয় আসনের ৪৬৯টি ভোটকেন্দ্রের সবকয়টি কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে ভোটবাক্স, প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার, আনসার ও পুলিশ সদস্যরা।
আজ রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোট শুরু হওয়ার আগে কেন্দ্রগুলোতে পাঠানো হবে প্রার্থীর নাম ও প্রতীক ছাপানো ব্যালট পেপার।
জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। জানা গেছে, তিনটি সংসদীয় আসনের ৪৬৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৩৯টিকেই ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে ১৭০টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩১টি, ২ আসনে ১৩০টির মধ্যে ৭৩টি ও ৩নং আসনে ১৬৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩৫টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছে তারা। এসব ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে থাকবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য। মাঠে সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসারসহ সাড়ে ৭ হাজার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কাজ করবে। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর সাতটি টিম, ৯ প্লাটুন বিজিবি, এক হাজার ৩২৪ পুলিশ সদস্য ও সাড়ে পাঁচ হাজার আনসার সদস্য। পাশাপাশি ৬ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ২৮ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। তারা যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে তৎক্ষণাৎ নির্দেশনা দিবেন ও বিশেষ বিশেষ প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জ-১: ইসির সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী শ্রীনগর ও সিরাজদিখান উপজেলার ২৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে ভোটারের সংখ্যা ৫ লাখ ৮ হাজার ৯৮৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬১ হাজার ৮৪৮ জন ও নারী ভোটার ২ লাখ ৪৭ হাজার ১৩৮ জন। শ্রীনগর উপজেলায় ভোটার ২ লাখ ৫৩ হাজার ৭৫৮ জন ও সিরাজদিখান উপজেলায় ভোটার ২ লাখ ৫৫ হাজার ২১২ জন।
মুন্সীগঞ্জ-২: লৌহজং ও টঙ্গীবাড়ী উপজেলার ২৩টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ২ আসনে ভোটারের সংখ্যা ৩ লাখ ৫২ হাজার ৪৩৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৮২ হাজার ৫১৪ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯১৯ জন। লৌহজং উপজেলায় ভোটার ১ লাখ ৬৪ হাজার ৩২৫ জন ও টঙ্গীবাড়ী উপজেলায় ১ লাখ ৮৮ হাজার ১০৮ জন। এখানে ১৩০টি ভোটকেন্দ্রের ৭৮৪টি ভোটকক্ষ।
মুন্সীগঞ্জ-৩ : সদর ও গজারিয়া উপজেলার ২টি পৌরসভা ও ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে ভোটারের সংখ্যা ৪ লাখ ৮২ হাজার ২৯৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৪৯ হাজার ৮৮৮ জন ও নারী ভোটার ২ লাখ ৩২ হাজার ৪০৬ জন। সদর উপজেলায় ভোটার ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৩১৩ জন ও গজারিয়া উপজেলায় ভোটার ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯৮১ জন। এখানে ১৬৯টি ভোটকেন্দ্রের ৯৯৮টি ভোটকক্ষ। ১, ২ ও ৩ আসনে ব্যালট পেপার পদ্ধতিতে এবারের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।