নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে গত মে মাসের শেষ সপ্তাহে পরীক্ষামূলকভাবে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গন্ডামারায় স্থাপিত এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট। এরপর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ধারাবাহিকভাবে সর্বোচ্চ ৩০০ থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করে গেছে। প্রথম ইউনিটে সফলভাবে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর পরিকল্পনা অনুযায়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রটি গত ৮ জুন সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয় এবং যথাসময়ে দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদনে যেতে কমিশনিং কার্যক্রম শুরু করা হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আসন্ন ঈদুল আজহার পর এ পাওয়ার প্ল্যান্টটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। এরপরই পূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করবে এসএস পাওয়ার। তবে জনগণের বিদ্যুৎ ভোগান্তি কমাতে আগামী ২০ জুন নাগাদ ফের উৎপাদন শুরুর চেষ্টা করবে এসএস পাওয়ার কর্তৃপক্ষ। গন্ডামারার এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে জাতীয় গ্রিডে নেট ১ হাজার ২২৪ মেগাওয়াট সমপরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির দুটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য পর্যাপ্ত কয়লার সরবরাহ এরই মধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। যার প্রথম চালান ১৮ জুনের মধ্যে চলে আসবে। আর দ্বিতীয় চালানটি আসবে চলতি মাসের শেষ দিকে। প্রকল্প ঋণের অংশ হিসেবে প্রায় ৭ লাখ টন কয়লা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই চলে আসবে।
এসএস পাওয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পাওয়ার প্ল্যান্টটিতে কয়লার সংকট নেই, বরং পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) গ্রিড সঞ্চালন ক্ষমতা উন্নয়নের পর পূর্ণমাত্রায় কমিশনিং কার্যক্রম শুরু হবে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে বাস্তবায়িত পাওয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্ট (পিপিএ) এবং বাংলাদেশ সরকার ও পিজিসিবির সঙ্গে বাস্তবায়িত ইমপ্লিমেন্টেশন এগ্রিমেন্ট (আইএ) অনুযায়ী উৎপাদিত বিদ্যুৎ কার্যকরভাবে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।
চীনের বিখ্যাত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রতিষ্ঠান সেপকো থ্রি’র যৌথ উদ্যোগে ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৮ হাজার কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণ করেছে দেশের অন্যতম শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী এস. আলম গ্রুপ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বেসরকারি এ মেগা প্রজেক্টটি বাস্তবায়নের ফলে জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা আরও সুদৃঢ় হওয়ার পাশাপাশি শিল্প ও সেচ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটবে। পাশাপাশি সরকার স্বলমূল্যে বিদ্যুৎ ক্রয় এবং সরবরাহ করে সাশ্রয় করতে পারবে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা।