তদন্ত কার্যক্রম প্রভাবিত করতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন ইউপি চেয়ারম্যান
নিজস্ব প্রতিবেদক
দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা এবং ইউপি সদস্যদের সাথে দুর্ব্যবহারসহ বিভিন্ন অভিযোগে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার ২নং বালুয়াকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান জুয়েলের বিরুদ্ধে গত ২৩ মার্চ অনাস্থা দেয় ইউনিয়নটির ১১ জন ইউপি সদস্য।
ইউপি সদস্যদের অভিযোগ, তদন্ত কার্যক্রম প্রায় শেষের দিকে আর এখন তদন্ত রিপোর্ট নিজের পক্ষে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন চেয়ারম্যান। তাদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে পাশাপাশি বিভিন্ন মাধ্যমে তদন্ত কার্যক্রম প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন তিনি।
এ বিষয়ে ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, অনাস্থা দেওয়ার পরপর নানাভাবে হুমকি পাচ্ছি আমরা। বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পাচ্ছি, তদন্ত প্রতিবেদন নিজের পক্ষে নিতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন চেয়ারম্যান। আমরা বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতি অনুরোধ দ্রুত তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করুন।
ইউনিয়নটির ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত ইউপি সদস্য পারভিন আক্তার বলেন, অনাস্থার কাগজে স্বাক্ষর করার পর থেকে নানাভাবে আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। চেয়ারম্যানের লোকজন প্রচার করছে এই অনাস্থায় তাদের নাকি কিছুই হবে না। চেয়ারম্যান নির্দোষ প্রমাণিত হবেন এবং যারা অনাস্থা কাগজে স্বাক্ষর করেছেন তাদের শায়েস্তা করবেন। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদের বাজেট ঘোষণা করা হলেও সেখানে ইউপি সদস্যদের ন্যূনতম সম্পৃক্ততা ছিল না। চেয়ারম্যান একাই বাজেট প্রণয়ন এবং ঘোষণা করেছেন। বিষয়টি আমাদের জন্য ভীষণ চিন্তার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ইউপি সদস্য বলেন, চেয়ারম্যান প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সাথে বিভিন্ন জায়গায় মিটিং করছেন। কয়েকটি হোটেল-রেস্তোরাঁয় তাদেরকে মিটিং করতে দেখা গেছে। ওই সকল কর্মকর্তারা আবার আমাদেরকে তার সাথে বিষয়টি সমাধান করে ফেলার জন্য অনুরোধ করছেন। তদন্তের রিপোর্টে সঠিক ঘটনা উঠে আসবে কিনা তা নিয়ে আমরা আশঙ্কা প্রকাশ করছি।
এ বিষয়ে বালুয়াকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান জুয়েল বলেন, আমি কাউকে কোন বিষয়ে হুমকি দেইনি। আর আমার লোকজন কাউকে হুমকি দিয়েছে বলে এমন কোন ঘটনা আমার জানা নাই। তদন্ত চলছে। যথাসময়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। আইনের মাধ্যমে যা ই হবে আমি সেটা মেনে নিব।
তদন্তকারী কর্মকর্তা গজারিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জি এম রাশেদুল ইসলাম বলেন, আমি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে তদন্ত কার্যক্রম শেষ করেছি। আগামী দু’একদিনের মধ্যে আমি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে দিব।
এ বিষয়ে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, তদন্ত প্রভাবিত করার কোন সুযোগ নেই। নিরপেক্ষতা বজায় রেখে আমরা কাজ করছি। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে পরবর্তী কার্যক্রমে যাবো। কোন ইউপি সদস্যকে চেয়ারম্যান হুমকি দিয়েছে এমন কোন খবর আমার কাছে নেই। চেয়ারম্যান অথবা তার লোকজন যদি এই ধরনের কোন কাজ করে তবে তারা আমাকে জানাতে পারে অথবা থানায় লিখিত অভিযোগ করতে পারে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের গত ২৩ মার্চ ইউপি সদস্যদের সাথে দুর্ব্যবহার, অনিয়ম, ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে বালুয়াকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুজ্জামান জুয়েলের বিরুদ্ধে অনাস্থা দেয় ইউনিয়নটির ১১ জন ইউপি সদস্য।