নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সফিউল্লাহ দেওয়ান রাসেল ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে সদস্য সচিব পদে জোড় তদবীর চালাচ্ছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। এ নিয়ে গুয়াগাছিয়া ইউনিয়ন জুড়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। স্থানীয় বিএনপিতে দেখা গেছে দ্বিধা বিভক্তির সুর।
জানা যায়, ২০০৭ সালে গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি এমরান সরকার এবং সাধারণ সম্পাদক সফিউল্লাহ দেওয়ান রাসেলকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটির অনুমোদন দেয় উপজেলা যুবলীগ। ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও সফিউল্লাহ দেওয়ান রাসেল গুয়াগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির কমিটিতে সদস্য সচিব পদ পাওয়ার জন্য থানা বিএনপির নেতৃবৃন্দদের কাছে জোড় তদবীর চালাচ্ছেন। একই ব্যক্তি বড় দুই দলের কমিটিতেই গুরুদায়িত্ব পাওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে রাজনীতির মাঠে।
এ বিষয়ে ওই ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি এমরান সরকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, সফিউল্লাহ দেওয়ান রাসেল দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আমি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে সফিউল্লাহ দেওয়ান রাসেল। এখনো এই কমিটি বহাল রয়েছে। একটি কমিটিতে থাকা সত্ত্বেও অন্য দলে যোগ দেওয়ার বিষয়টি আসলেই হাস্যকর।
ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা বিল্লাল তালুকদার বলেন, সফিউল্লাহ দেওয়ান রাসেল আসলে কোন দল করে বুঝতে পারছি না। রাজনীতির শুরু থেকে আমাদের সাথে যুবলীগ করে আসলো। এখন শুনছি সে ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব প্রার্থী।
এ বিষয়ে গুয়াগাছিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হুমায়ুন সরকার বলেন, সফিউল্লাহ দেওয়ান রাসেল যুবলীগ করতো। সে আমার সময় ওয়ার্ড যুবলীগের নেতা। সে বিভিন্ন মিটিং মিছিলে অংশগ্রহণ করতো। এক ব্যক্তি দুই দলে কি করে থাকে? তার দল থেকে পদত্যাগ নিয়ে অন্য দলে যাওয়াটা দরকার ছিল।
বর্তমান গুয়াগাছিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নরুল খান বলেন, সফিউল্লাহ দেওয়ান রাসেল যুবলীগের নেতা। ২০০৭ সালে গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের উত্তর জামালপুর গ্রামে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে ওয়ার্ড সম্মেলন হয়েছিল। তখন গজারিয়া উপজেলা যুবলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও গুয়াগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কামরুল হোসেন চৌধুরী ফিরোজ এমরান সরকারকে ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি এবং সফিউল্লাহ দেওয়ান রাসেলকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয়। এখন শুনছি সে নাকি বিএনপির সঙ্গে যোগ দিয়েছে।
এদিকে সফিউল্লাহ দেওয়ান রাসেল বলেন, আমি কখনো আওয়ামী যুবলীগের রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলাম না। রাজনীতির শুরু থেকে আমি বিএনপির সাথে জড়িত ছিলাম এবং এখনো আছি। আগামী গুয়াগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে আমি সদস্য সচিব পদপ্রার্থী। একটি মহল ঈর্ষান্বিত হয়ে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য অপপ্রচার করছে।
এ বিষয়ে গজারিয়া থানা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রহমান সফিক বলেন, এ সপ্তাহের মধ্যে গুয়াগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হবে। সফিউল্লাহ দেওয়ান রাসেলসহ অনেকে সদস্য সচিব পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যাচাই-বাছাই করে সদস্য সচিব হিসেবে মনোনীত করা হবে।