নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় বিভিন্ন শিল্প কারখানায় গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করার দাবিতে সম্মিলিতভাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে কয়েকটি শিল্প কারখানার প্রতিনিধিরা। সংবাদ সম্মেলন থেকে তারা এসব কারখানার গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সরকারের প্রতি দাবি জানান।
গতকাল বুধবার বিকালে গজারিয়া প্রেসক্লাবের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি শিল্প কারখানার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, গত রবিবার কোনরকম পূর্ব ঘোষণা অথবা নোটিশ ছাড়া গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। এতে গজারিয়া উপজেলার অধিকাংশ এলাকার বৈধ, অবৈধ সকল সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় অধিকাংশ শিল্প কারখানার উৎপাদন বন্ধ এবং বৈধ গ্রাহকরা পড়েছেন সীমাহীন দুর্ভোগে। কারখানাগুলোতে প্রতিদিন অন্তত ১৫ কোটি টাকার লোকসান গুনতে হচ্ছে। পাশাপাশি অলস বসে থাকতে হচ্ছে এসব কারখানার অন্তত বিশ হাজার শ্রমিককে।
এসময় প্যাসিফিক ইন্টিগ্রেইটেড ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের মহাব্যবস্থাপক (এডমিন) ইউনুস আলী বলেন, তিতাস নিয়মতান্ত্রিকভাবে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করেনি। আমরা বৈধভাবে সংযোগ নিয়ে সরকারকে রাজস্ব দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করি। গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করার আগে অবশ্যই আমাদের চিঠি দিয়ে জানানোর দরকার ছিল, যা তিতাস করে নাই। গ্যাস ছাড়া বিকল্প উপায়ে কারখানা চালু রাখতে গেলে আমাদের প্রতিদিন ১০ লক্ষ টাকার বেশি লোকসান গুনতে হচ্ছে। গত চার দিনে আমাদের ৪০ লক্ষ টাকার বেশি লোকসান হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের কারখানা বন্ধ করে দিতে হবে। কারখানাটিতে কর্মরত কয়েকশ শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে। ঈদ আসন্ন আমাদের অনেক অর্ডার রয়েছে। প্রশাসনের প্রতি বিনীত অনুরোধ, আপনারা শিল্প খাতের বৈধ গ্রাহকদের গ্যাস দিন।
সুপারস্টার গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজার মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান বলেন, তিতাস গ্যাসের এই সিদ্ধান্তটি একটি হঠকারী সিদ্ধান্ত। গরমে ফ্যানসহ ইলেকট্রনিক্স পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায় বহুগুণ। তবে গ্যাস না থাকায় আমাদের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আমরা তিতাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পর্যন্ত যোগাযোগ করেছিলাম তারা আমাদের নিজস্ব উদ্যোগে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বলে যা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। শিল্প কারখানা টিকিয়ে রাখতে অনতিবিলম্বে শিল্প কারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করতে আমরা সরকারের প্রতি দাবি জানাচ্ছি।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফিদা সিএনজি ফিলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুক্তার হোসেন, নিউ হোপ এগ্রোটেক বাংলাদেশ লিমিটেডের সহকারী মহাব্যবস্থাপক সালাউদ্দিন সাগর, পাইওনিয়ার পেপার এন্ড বোর্ড কোম্পানির উপমহাব্যবস্থাপক জিল্লুর রহমান, পলি কেবল ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক আল আমিন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গজারিয়া উপজেলায় বৈধ গ্রাহকের তুলনায় অবৈধ গ্রাহকের সংখ্যা বেশি দাবি করে গত রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কোন প্রকার ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। ফলে বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের আংশিক, ভবেরচর, বাউশিয়া ও ইমামপুর ইউনিয়নের সকল এলাকার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। হঠাৎ করে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছে এসব এলাকার প্রায় দুই হাজার বৈধ আবাসিক গ্রাহক। অন্যদিকে গ্যাসের অভাবে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এসব এলাকার শিল্প কারখানাগুলোতে।
গজারিয়ায় শিল্প কারখানায় গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
আগের পোস্ট