নিজস্ব প্রতিবেদক
দুই পাশে বাঁশের সাঁকো মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে একটি সেতু -এমনই দৃশ্য চোখে পড়বে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায়। উপজেলার টেঙ্গারচর ইউনিয়নের টেঙ্গারচর গ্রাম ও হোসেন্দী ইউনিয়নের হোসেন্দী গ্রামের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য তিস্তা খালের উপর একটা সেতু নির্মাণ করা হলেও দুই পাশে অ্যাপ্রোচ সড়ক না থাকায় বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করে সেতুতে উঠানামা করতে হয় স্থানীয়দের। এতো ভোগান্তি কমার পরিবর্তে উল্টো বেড়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।
সরেজমিনে ঐ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয়দের চলাচলের সুবিধার্থে তিস্তা খালের উপর একটি সেতু নির্মাণ করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তর হতে কাজটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। খালের দৈর্ঘ্যরে তুলনায় সেতুর দৈর্ঘ্য কম সেজন্য সেতুর দুই পাশে প্রায় ১৫০ ফুট দীর্ঘ বাঁশের সাঁকো বানানো হয়েছে। দুটি গ্রামের অন্তত হাজার খানেক মানুষ প্রতিদিন সেতুটি ব্যবহার করে। তবে সেতুর অ্যাপ্রোচ না থাকায় বাঁশের সাঁকো ব্যবহারে স্থানীয়দের দুর্ভোগ কমার পরিবর্তে উল্টো বেড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা হাজী আব্দুস সালাম বলেন, দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এখানে সেতু নির্মাণ করা হলেও তাদের দুর্ভোগ কমেনি। সেতুর দুই পাশের সড়কের অধিকাংশ অংশ ভাঙ্গা এবং দখল হয়ে গেছে। সেতুতে উঠতে এবং নামতে বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করতে হয় যা বয়স্ক মানুষের জন্য কষ্টকর। আর যে মানের কাজ কয়েছে তাও সন্তোষজনক নয়।
স্থানীয় একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তানিয়া আক্তার বলেন, সেতুর দুই পাশে প্রায় দেড়শ ফুট বাঁশের সাঁকো রয়েছে। তার মত অনেক শিক্ষার্থী নিয়মিত এ পথে যাতায়াত করে। বাঁশের সাঁকো পার হয়ে সেতুতে উঠানামা তাদের জন্য খুব কষ্টকর।
গৃহিণী শারমিন আক্তার বলেন, দুই পাশে যদি বাঁশের সাঁকোই থাকে তাহলে মাঝখানে সেতু নির্মাণের কি প্রয়োজন? এ সেতু তাদের কোন কাজেই আসছে না বরং এর জন্য মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে।
এ বিষয়ে টেঙ্গারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ কামরুল হাসান ফরাজী বলেন, আমি গত ১৫ জুলাই সরেজমিনে সেতুটি পরদর্শন করেছি। সেতুর দুই পাশে অ্যাপ্রোচ সড়ক নেই। বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করে সেতুতে উঠতে এবং নামতে হয়। এসব অসুবিধা দূর করতে সেখানে বালি ফেলা ও গাইড ওয়াল নির্মাণ করা দরকার। বিষয়টি আমি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে গজারিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। তবে সেতুটির অ্যাপ্রোচ ভরাট করার জন্য মাত্র ৬৫ হাজার টাকা ধরা আছে। তবে বাস্তবে খরচ পড়বে তার কয়েকগুণ বেশি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে মাটি ভরাটসহ কিছু কাজ বাকি থাকায় আমরা তাদের পুরো বিল দেইনি। সেতুর অ্যাপ্রোচে মাটি ভরাটের আমরা আরেকটি প্রজেক্ট দিব। কাজটি শেষ হলে সেতুটি ব্যবহারকারীদের আর কোনো দুর্ভোগ থাকবে না।
উল্লেখ্য, প্রায় ৮৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তিস্তা খালের উপর ১৫ মিটার দীর্ঘ এই আরসিসি গার্ডার ব্রিজটি নির্মাণ করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর।