নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার গাঁওদিয়া ইউনিয়নে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাদক কারবারিরা এক যুবককে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় গত মঙ্গলবার রাতে থানায় মামলা হয়েছে। এর আগে গত ৯ জুলাই রাতে উপজেলার শামুরবাড়িস্থ শিমুলবাড়ি পদ্মারপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত দানেশ মাদবরের বড় ভাই মো. চাঁন মিয়া মাতবর বাদি হয়ে ২ জনকে আসামি করে গত ১০ জুলাই লৌহজং থানায় অভিযোগ দায়ের করলে ১৮ জুলাই মামলাটি রুজু করা হয়।
স্থানীয় ও মামলার সূত্রে জানা যায়, শিমুলবাড়িতে আহত দানেশ মাদবরের বসতবাড়ির পাশে পদ্মারপাড় এলাকায় বিবাদী মাদক কারবারি হানিফ মাদবরের (৩২) সাথে চায়ের দোকানদার সজিবের বিরোধ বাঁধলে আহত দানেশের ছেলে আব্দুর রহমান (১৬) গিয়ে ঝগড়া হতে বিরত থাকার অনুরোধ করেন। তখন হানিফ মাদবরের বাবা ২নং আসামি দানেশ মাদবর (৬৫) আব্দুর রহমানকে কিল, ঘুষি, লাথি মারতে থাকে। তখন আব্দুর রহমানের ডাকচিৎকারে আহত দানেশ (৪২) এগিয়ে গেলে ২নং আসামি দানেশের হুকুমে ১নং আসামি হানিফ মাদবরকে চাপাতি নিয়ে ধাওয়া করলে দানেশ তার বসতঘরে ঢুকে প্রাণ রক্ষার চেষ্টা করে। তখন আসামি হানিফ মাদবর ঘরে প্রবেশ করে দানেশ মাদবরের হাতে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে বৃদ্ধাঙ্গুলের গোড়ায় গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম কওে এবং আসামিরা তাদের ঘরবাড়িতে ভাঙচুর চালায়। এরপর প্রতিবেশীরা আহত দানেশ মাদবরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান এবং পরে মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মিটফোর্ড ঢাকায় রেফার করেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখানকার ডাক্তার তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে। সেখানকার ডাক্তার তাকে পঙ্গু হাসপাতালে রেফার করে। পরে আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য মোহাম্মদপুর প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে দানেশ মাদবর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান চিকিৎসক।
স্থানীয়রা আরো জানান, এই হানিফ মাদবর কয়েকমাস আগেও যুবককে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে গাল কেটে দিয়েছিলো। এছাড়া গাঁওদিয়া এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী এই হানিফ এলাকায় প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে বিভিন্ন ধরনের মাদক বিক্রয় করে থাকে। এই হানিফ একাধিকবার গ্রেফতার হলেও কিছুদিন পর জামিনে বেরিয়ে এসে আবারও ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। গাঁওদিয়ার পদ্মার পাড় কলাবাগান ও হাড়িদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে এখন মাদকের হাট নামে পরিচিতি রয়েছে। আর ওইসব স্থান থেকে দূর-দূরান্তের আসা বিভিন্ন মাদকসেবী ইয়াবা, ফেনসিডিল ও হেরোইন সেবন ও ক্রয় করে থাকে।
এ বিষয়ে লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।