নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলায় ৫১তম পাক হানাদার মুক্ত দিবস নানা আয়োজনে পালিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড এর আয়োজনে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে দিবসটি পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে কমপ্লেক্স ভবনের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু করা হয়। এরপর বর্ণাঢ্য র্যালী করা হয়। র্যালিটি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন সামনে থেকে থানা পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করে পুনরায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে এসে শেষ হয়। র্যালি শেষে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের সম্মেলন কক্ষে মহান মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত ও জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের শরীরের সুস্থতা কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা, স্মৃতিচারণমূলক মুক্ত আলোচনা করা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড এর পক্ষ থেকে ৫১তম পাক হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে ২০ পাউন্ডের কেক কাটাসহ নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করা হয়। এছাড়া ২১ বিক্রমপুর-টঙ্গীবাড়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। মুক্ত আলোচনা সভায় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ রাশেদুজ্জামান, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ইঞ্জিনিয়ার কাজী আবদুল ওয়াহিদ, অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাজিব খান। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সাবেক কমান্ডার ও মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক এর সভাপতিত্বে এসময় সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সাঈদ বাচ্চু বেপারী, ডেপুটি কমান্ডার (অর্থ) বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রউফ মোল্লা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রুহুল আমিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোখলেছুর রহমান শেখ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ জব্বার কাজী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শহীদ বেপারী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন মাঝি, বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক সরকারসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি মনিরুল হক টিটু, সাধারণ সম্পাদক ইখতিয়ার হোসেন সিকদার ডলার, আবুল কাশেম শেখ, মোঃ মোক্তার হোসেন বেপারী, মোঃ বাবর কবির, রিংকু বেপারী, মিঠু মাঝি, সামসুদ্দিন তুহিন, আরিফুর রহমান বাবু, মাসুম মল্লিক, সুজন শেখ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১৪ নভেম্বর রাতে টঙ্গীবাড়ী উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন টঙ্গীবাড়ী থানায় হামলা চালায়। রাত ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আক্রমণের মুখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী একসময় মাইকে আত্মসমর্পণের ঘোষণা দেয়। এ মহান কৃতিত্বে অবদান রাখেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ শামসুল হক, মুক্তিযোদ্ধা সরাফত হোসেন রতন, আঃ রউফ মোল্লা, মোফাজ্জল হোসেন, স্বপন দাস গুপ্তসহ থানার অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা। পরে রাতেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে। এর মধ্য দিয়েই ১৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং চ্যানেল (বিবিসি) এর ঘোষণা মতে, টঙ্গীবাড়ী থানা বাংলাদেশের ১ম থানা হিসাবে হানাদার মুক্ত হয়।
টঙ্গীবাড়ীতে পাক হানাদার মুক্ত দিবস পালিত
আগের পোস্ট