নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার বালিগাঁও বাজার সংলগ্ন বালিগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান সড়কের পশ্চিম পাশের সরকারি বরাদ্দে তৈরি ইটের রাস্তায় ঘর নির্মাণ করে ১২ লাখ টাকায় বিক্রয় ও হস্তান্তরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বাসিন্দা মৃত এসহাক মোল্লার ছেলে মোঃ মিল্টন মোল্লার বিরুদ্ধে। উপজেলা প্রশাসন বলছে, তদন্তে মাঠে কর্মকর্তারা। প্রমাণ পেলেই নেয়া হবে আইনি পদক্ষেপ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টঙ্গীবাড়ী উপজেলার বালিগাঁও বাজারের পশ্চিম পাশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বসবাস দীর্ঘদিন যাবৎ। স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রাস্তাটি দিয়ে এখানকার বাসিন্দারা যাতায়াত করে। কিছু দূরে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার উপরে একটি আধাপাকা বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। আরো কিছু দূরে রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও শ্মশান। মৃত ব্যক্তি শ্মশানে নিয়ে যেতে ঐ রাস্তা দিয়ে কষ্ট হলেও তারা ভয়ে প্রতিবাদ না করে চুপচাপ থাকে। সাংবাদিক দেখে সকলে এগিয়ে আসে বাস্তব সত্য বর্ণনা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ সুলতান খান জানান, এ বিষয়ে গত ৩১ জানুয়ারি টঙ্গীবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, টঙ্গীবাড়ী উপজেলার হাট বালিগাঁও বাজার সংলগ্ন উচ্চ বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশের মেইন রোড সংলগ্ন একটি সরকারি খাল বিদ্যমান ছিল। পরবর্তীতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী মোঃ দুলাল উক্ত খালটি ভরাট করে সরকারী রাস্তা নির্মাণ করেন এবং রাস্তায় ইটের সলিং করেন। উক্ত রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার লোকজন যাতায়াত করে ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটি শ্মশান খোলা আছে ফলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। বর্তমানে সরকারি রাস্তাটি জোরপূর্বক দখল করেন হাট বালিগাঁও এলাকার মিল্টন মোল্লা (৫৫)। তিনি উক্ত রাস্তার উপর আধাপাকা টিন শেড ভবন নির্মাণ করেন এবং উক্ত ভবনটি স্থানীয় লোকজনদের নিকট ১২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বিক্রয় করেন। যার ভিপি কেস নং-৬৬/৮৭। খতিয়ান এস এ-৬১, আর.এস-১৭৩, এস.এ- ৩৩৩, আর.এস ১৮৩ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মিল্টন মোল্লা বলেন, এটা কোন সরকারি রাস্তা না। ৪০ বছর যাবৎ আমার নামে লিজে আছে। বর্তমানেও লিজে আছি। ১২ লাখ টাকা বিক্রির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি কেন সরকারি রাস্তা বিক্রি করবো? এটা কোন সরকারি রাস্তা না। যে অভিযোগ দিয়েছে সে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। আমি এসিল্যান্ডের সাথে কথা বলেছি।
এ বিষয়ে বালিগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী মোঃ দুলাল বলেন, আমি এ বিষয়ে কোনো কিছু জানি না। আমাকে কেউ অবগত করেনি। যদি ইউএনও অফিসে অভিযোগ দিয়ে থাকে তাহলে তারাই আইনগত ব্যবস্থা নিবে।
এ বিষয়ে টঙ্গীবাড়ী সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেজওয়ানা আফরীন বলেন, গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে কর্মকর্তা পাঠিয়েছিলাম, তারা সরেজমিনে গিয়ে ছবি সংগ্রহ করে নিয়ে এসেছে। রবিবার সকাল ১০টায় মিল্টন মোল্লাকে অফিসিয়ালি ডাকিয়েছিলাম তার কাগজপত্র নিয়ে আসার জন্য, কিন্তু তিনি আসেননি। রবিবারও সরেজমিনে তদন্তে কর্মকর্তা পাঠিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, আমি এ বিষয়ে অবগত আছি। সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে বলেছি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে।