মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ২০টি স্থানে শোক সভা, খাদ্য বিতরণ, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল
নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতীক। আমাদের এগিয়ে চলার অমিত শক্তিÑ চিরঞ্জীব অনুপ্রেরণা তিনি। বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শই বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির দিকদর্শন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল রবিবার মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ২০টি স্থানীয় শোক সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল এবং খাদ্য বিতরণ কর্মসূচিতে এ কথা বলেন তিনি। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুন্সীগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহতাব উদ্দিন কল্লোল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আল-মাহমুদ বাবু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা তপন, কাউন্সিলর মকবুল হোসেন, নার্গিস আক্তার, জেলা শ্রমিক লীগ নেতা আবুল কাশেম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম পলাশ প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতীক। তিনি বাংলার মাটি ও মানুষের পরম আপনজন, শত বছরের জেঁকে বসা ঘোর নিশীথিনীর তিমির বিদারী অরুণ, ইতিহাসের বিস্ময়কর নেতৃত্বের কালজয়ী স্রষ্টা, ইতিহাসের মহানায়ক, বাঙালি জাতির বিমূর্ত ইতিহাস, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা। বাঙালি জাতির পিতা। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। আমাদের অন্তহীন প্রেরণার উৎসÑ আধুনিক সমৃদ্ধ সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন সারথী।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার সকল অনুভূতি আর উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ত্যাগ ও সংগ্রামের মধ্য দিয়েÑ তার বীরত্বপূর্ণ নেতৃত্ব, বাঙালি জাতির প্রতি তার গভীর ভালোবাসা, মমত্ববোধ, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপসহীন রাজনৈতিক আদর্শ বাঙালির জাতির মধ্যে দেশপ্রেম সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিলÑ তিনি সাড়ে সাত কোটি মানুষকে মুক্তির মন্ত্রে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। রাজনৈতিক সংগ্রাম, অদম্য স্পৃহা, দৃঢ় প্রত্যয়, বীরত্বপূর্ণ আপসহীন নেতৃত্ব, আত্মত্যাগের মন্ত্রে সকলকে উজ্জীবিত করে বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য লড়াই করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার কাক্সিক্ষত লক্ষ্য একটি স্বাধীন ভূ-খন্ড প্রতিষ্ঠায় চূড়ান্ত আত্মত্যাগে প্রতীজ্ঞ বঙ্গবন্ধু অন্যায়, অত্যাচার ও প্রলোভনের কাছে মাতা নত করেননি।
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘটনাবহুল বৈচিত্র্যমন্ডিত কর্মময় জীবন এতো ব্যাপক যে, তা সীমিত পরিসরে বর্ণনা করা সম্ভব নয়। একজন নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর ছিল অতুলনীয় দেশপ্রেম এবং জনগণের প্রতি অপরিমেয় ভালোবাসা। একজন মানুষ হিসেবে তিনি ছিলেন অসীম সাহসী, বিশাল হৃদয়ের এবং উদার দৃষ্টিভঙ্গীর সহজ সরল মানুষ। নীতি ও আদর্শে তিনি ছিলেন দৃঢ় প্রতীজ্ঞ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্মময় জীবনের কেন্দ্র ছিল জনগণ। জনগণের জন্য ভালোবাসা ছিল তার সব কর্মকান্ডের প্রেরণা, জনগণের ওপর বিশ্বাস ছিল তার কর্মকান্ডের ভিত্তি এবং জনগণের কল্যাণই ছিল তার সব কর্মকান্ডের লক্ষ্য। নির্যাতিত-নিপীড়িত, লাঞ্ছিত-বঞ্চিত-শোষিত মানুষের মুক্তিই ছিল বঙ্গবন্ধুর জীবনের একমাত্র ব্রত।
তিনি বলেন, খুনি মোশতাক ও জিয়া বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পর আত্মস্বীকৃত খুনিদের দেশ ত্যাগ করার সুযোগ করে দেন, কয়েকজনকে বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেন। আজ বহু বছর পরে হলেও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারকার্য সম্পন্ন হয়েছে। পাঁচজন আত্মস্বীকৃত খুনির ফাঁসির দন্ডাদেশ কার্যকর হয়েছে। ফাঁসির দন্ডে দন্ডিত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থাকা খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ১৯৭৫ পরবর্তীকালে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ছিল। তিনি স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার, আলবদর, আলশামস, জামাতি যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসিত করেন, দেশ ও জাতিদ্রোহী কয়েকজনকে রাষ্ট্রক্ষমতায় অংশীদার করেন, বাঙালি জাতীয়তাবাদের পরিবর্তে পাকিস্তানি ভাবধারা সংবলিত ধর্মনিরপেক্ষতার উচ্চ আদর্শ বর্জিত বিকৃত এক উদ্ভট আদর্শ তুলে ধরেন, ধর্মের নামে আবার সুবিধাবাদী রাজনীতি করার সুযোগ অবারিত করেন।