নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ও মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যাকান্ডের কুশিলব ও নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে। এমন পাশবিক ষড়ন্ত্রের কুশীলবদের ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের হাত থেকে দেশকে এবং আগামী প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে।
গতকাল ২২ আগস্ট সোমবার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা পঞ্চসার ইউনিয়নের ১৭টি স্থানে গণভোজ, দোয়া মাহফিল এবং কয়েকটি স্থানে আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষকলীগ সভাপতি মহাসীন মাখন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আল মাহমুদ বাবু, কাউন্সিলর মকবুল হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের জেলা সভাপতি জালাল উদ্দিন রাজন, গোলাম রসুল সিরাজী রোমান, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম পলাশ, যুবলীগ নেতা জাহিদুল হাসান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক আপন দাস, শিল্পাঞ্চল আঞ্চলিক শ্রমিক লীগ সভাপতি আবুল কাশেম, ইউপি সদস্য শহীদুল ঢালী, আব্দুস সালাম, মামুন মেম্বার, বাদশা মিয়া, রহিম মেম্বার, শামীম আহমেদ প্রমুখ। পঞ্চসার ইউনিয়নের চরমুক্তারপুর, চরসন্তোষপুর, পঞ্চসার পেট্রোল পাম্প, দশকানি ভট্টাচার্যের বাগ, তেলির বিল, পঞ্চসার মোড়, সদরারপাড়া, দেওয়ান বাজার, বিনোদপুর, মালিরপাথর, সরকারপাড়া, চাম্পাতলা এলাকায় শোক দিবসের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন তিনি।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, বাঙালি ও বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কালজয়ী নাম। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানবতার দুশমন প্রতিক্রিয়াশীল নিষ্ঠুর ঘাতকগোষ্ঠী সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। এরপর খুনিচক্র অবৈধভাবে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে বাংলাদেশকে পিছনের দিকে ঠেলে দেয়; পাকিস্তানি ভাবধারায় দেশ পরিচালনা করে। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি এবং ১৫ আগস্টের খুনিদের পুনর্বাসন ও শক্তিশালী করা হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধের ভাবাদর্শ ও ত্রিশ লাখ শহীদের স্বপ্নাকাক্সক্ষাকে ভূলুণ্ঠিত করে জাতিদ্রোহী দেশদ্রোহী গোষ্ঠীকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করা হয়। দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অসীম ত্যাগ ও আত্মদানের বিনিময়ে সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাঙালি জাতিকে খুনি জিয়া-মোশতাক চক্র আবারও স্বৈরশাসনের নিষ্ঠুর নাগপাশে বন্দি করে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সারাজীবন এদেশের মাটি ও মানুষের অধিকার আদায় ও কল্যাণের জন্য সংগ্রাম করেছেন। বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য জীবনের ১৪টি বছর পাকিস্তানি কারাগারের অন্ধপ্রকোষ্টে বন্দি থেকেছেন, দুইবার ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন। কিন্তু আত্মমর্যাদা ও বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের প্রশ্নে কখনো মাথা নত করেননি, পরাভব মানেন নি।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭৫-এর ১৫ই আগস্ট যদি আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকান্ডের শিকার না হতেন, জাতির পিতা যদি বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ অনেক আগেই উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হতো। আমাদের নতুন প্রজন্ম আরও সুখি সমৃদ্ধ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারতো, উন্নত জীবনের অধিকারী হতো।
তিনি বলেন, তিনি এমন একজন বিশ^বরেণ্য নেতা ছিলেন- যাঁর নেতৃত্ব, সাহস, সততা, দক্ষতা, কৌশল, দূরদর্শিতা, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গী সমসাময়িক বিশ^নেতৃবৃন্দকে ছাপিয়ে গিয়েছিল। তিনি ছিলেন বিশ্বমুক্তিকামী মানুষের অন্যতম পথিকৃৎ, অকৃত্রিম সুহৃদ, নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের জাগরণের অনুপ্রেরণা, সাম্রাজ্যবাদ-সামন্তবাদ উপনিবেশবাদ, নয়া উপনিবেশবাদ ও বর্ণ বৈষম্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াকু বীরসেনানী, জোট-নিরপেক্ষ তৃতীয় বিশ্বের অনন্য প্রবক্তা নিরস্ত্রীকরণে বিশ্বাসী শান্তিরদূত, জুলিও কুরি পদক বিজয়ী শান্তি সংগ্রামী। তিনি হয়ে উঠেছিলেন বিশে^র লাঞ্চিত-বঞ্চিত-নিপীড়িত-শোষিত মানুষের মুখপাত্র।
তিনি বলেন, বাঙালির আদর্শ পুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বর্তমান প্রজন্মের মন-মননে চিন্তা-চেতনে আদর্শ-অনুপ্রেরণে চেতনায়-জাগরণে প্রদীপ্ত শিখারূপে প্রবাহমান। ক্ষণজন্মা এই মহামানবের স্বপ্নের উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মাণে তাঁরই নির্দেশিত পথ ধরেই এগিয়ে যাবার দৃপ্ত শপথে বাঙালি জাতি আজ বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা, বাঙালির আশা-আকাক্সক্ষা প্রত্যয় ও প্রত্যাশার বিশ^স্ত ঠিকানা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ।