ভ্রাম্যমাণ মৌসুমী ব্যবসায়ীরা পেশা বদলে ফেরি করে পতাকা বিক্রি করছেন
নিজস্ব প্রতিবেদক
আগামী ২০ নভেম্বর থেকে শুরু হবে কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর। যতই দিন ঘনিয়ে আসছে ততই সারাদেশে বাড়ছে বিভিন্ন দলের সাপোর্টারদের উত্তেজনা। ফুটবলপ্রেমীরা শুরু করে দিয়েছেন দিন গণনা। বিশ্বের সঙ্গে এ রোমাঞ্চের জন্য অধীর আগ্রহে খেলা দেখার জন্য রয়েছেন বাংলাদেশের সমর্থকরাও। এরই অংশ হিসেবে বাড়ছে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর পতাকা বিক্রির হিড়িক। মুন্সীগঞ্জে কয়েকদিন যাবৎ অনেক ভ্রাম্যমাণ মৌসুমী ব্যবসায়ীরা পেশা বদলে ফেরি করে পতাকা বিক্রি করছেন। ছুটছেন শহরের বিভিন্ন বাজার ও অলিগলিতে। ফুটপাতে দাঁড়িয়ে কিংবা পথে-ঘাটে হেঁটে পতাকা বিক্রি করছেন। বাংলাদেশে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল ফুটবল দলের সমর্থক বেশি থাকায় এই দুই দেশের পতাকা বিক্রি গ্রামাঞ্চল থেকে শহর এলাকায় বেশি। অন্যান্য দেশের পতাকাও কম-বেশি বিক্রি হচ্ছে। এদিকে পতাকার পাশাপাশি চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের জার্সি ও ব্যাজ বানানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন দর্জি কারিগররা।
মুন্সীগঞ্জে বিভিন্ন বাজার ও শহরের অলিগলি ঘুরে পতাকা বিক্রি করছেন কলিমউল্লাহ বয়স ৪৫ এই পতাকা বিক্রেতা জানান, দিনে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকার মত পতাকা বিক্রি করি। তিনি আরো বলেন, বিশ্বকাপ ও ডিসেম্বর মাসে আমাদের এই ব্যবসা বেশি ভাল হয়। বিজয়ের মাসে বাংলাদেশের পতাকাও সমান তালে বিক্রি হচ্ছে আর চাহিদাও ভালো। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন এলাকায় পতাকা বিক্রি করেন। কলিমউল্লাহ বলেন, তার মতো অনেকে শহরের অলিগলিতে পতাকা বিক্রি করছেন। বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে পতাকা বিক্রি বেশি হচ্ছে। আর বেশিরভাগ ক্রেতা হচ্ছে নানান বয়সী শিক্ষার্থীরা।
বিশ্বকাপ খেলাকে সামনে রেখে পতাকা কিনতে আসা স্কুল ছাত্র সায়মন বলেন, বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দরজায় কড়া নাড়ছে। তাই প্রিয় দল আর্জেন্টিনার সমর্থক হয়ে ৩০০ টাকা দিয়ে একটি পতাকা কিনে নিলাম।
পতাকার দামের বিষয়ে কলিমউল্লাহ বলেন, প্রতিটি বড় আকারের লাল-সবুজ পতাকা ২০০ টাকা, মাঝারি ১৫০ টাকা, ছোট আকারের ৩০ থেকে ৫০ টাকা, মাথায় বাঁধার ফিতা ১৫ টাকা, আর রাবারের ফিতা ২৫ টাকা, ছোটদের লাঠি পতাকা ১৫ টাকা আর চরকি পতাকা ১৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন তিনি। প্রতিদিন গড়ে যা বিক্রি করি তা দিয়ে দিন চলে যায়। এখন আবার সবকিছুর দাম বেশি সে কারণেই লাভ তেমন হচ্ছে না। কারিগরের মজুরী বেশি তাই লাভ কম হয়।
মুন্সীগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হক স্বপন বলেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে পুরোপুরি শুরু হবে বিশ্বকাপের আমেজ। পতাকা বিক্রির পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, চায়ের দোকান থেকে বাড়ির উঠোনে তর্ক-বিতর্কে মেতে উঠবেন ফুটবলপ্রেমীরা। আর তখন ছোট ছোট চায়ের দোকান ও শহরের অলিগলিতে শোভা পাবে প্রিয় দলের প্রিয় পতাকা। বিশ^কাপ শুরু হবার ১৫ দিন আগে থেকেই পতাকা বিক্রির ধুম পড়ে। এবার অন্যবারের তুলনায় শহরের অলিগলিতে পতাকা বিক্রেতাদের আনাগোনা চোখে পড়ছে বেশি। এছাড়াও শহরের দর্জির দোকানগুলোতে পতাকা বানাতে দর্জি কারিগরদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যাচ্ছে।