নিজস্ব প্রতিবেদক
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবুল হাদী খান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গতকাল শনিবার ভোর ৪টায় ঢাকার জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ……… রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও তিন মেয়ে, আত্মীয়স্বজনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, টঙ্গীবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার কাজী আব্দুল ওয়াহিদ, দৈনিক মুন্সীগঞ্জের কাগজের সম্পাদক মোহাম্মদ আরফিন ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ, নানা শ্রেণি পেশার মানুষ মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে গভীর শোক প্রকাশ এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। যথাযোগ্য রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জানাজা নামাজ শেষে মুন্সীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
মোঃ আবুল হাদী খান ১৯৫০ সালের ৩০ জানুয়ারি মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী উপজেলার দীঘিরপাড় ইউনিয়নের সরিষাবন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম মোসলেম উদ্দিন খান এবং মাতা মরহুমা বেগম হাসনে বানু। তিনি ১৯৬৫ সালে এস.এস.সি এবং ১৯৬৭ সালে মুন্সীগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। অতঃপর ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। এই সময়েই তিনি জড়িয়ে পড়েন ছাত্র রাজনীতিতে। তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সহকারী দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৯-এ গণআন্দোলন শুরু হলে তিনি এ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালে অসুস্থতার কারণে তার লেখাপড়া বাধাগ্রস্ত হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি সক্রিয়ভাবে তাতে অংশগ্রহণ করেন। দেশ স্বাধীন হলে তিনি পুনরায় হরগঙ্গা কলেজে স্নাতকে (মানবিক) ভর্তি হন। ১৯৭৩ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি বিএড ডিগ্রীও অর্জন করেন। প্রধান শিক্ষক পদে ২০১০ সালে তিনি শিক্ষকতা পেশা থেকে অবসর গ্রহণ করেন। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় তিনি লেখালেখি শুরু করেন। এসময় থেকেই তিনি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের কাজে জড়িয়ে পড়েন। ২০১৩ সালে তার লেখা ‘স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু’, ‘গণতন্ত্রের মানসকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা’ ও ‘৭১ এর গণহত্যা’ নামক তিনটি বই প্রকাশিত হয়। উল্লেখ্য, তার স্ত্রী নিলুফার বেগম চলতি বছর মে মাসের ৮ তারিখে ইন্তেকাল করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবুল হাদী খান আর নেই
আগের পোস্ট