নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের নোয়াদ্দা ঢালী কান্দি গ্রামের দিন মজুরের মেয়ে মাদ্রাসা ছাত্রী (১৪) ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ধর্ষণের শিকার হওয়া ওই ছাত্রী মারাত্মক আহত হয়ে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়ে জীবন বাঁচাতে কাতরাচ্ছে। গত শুক্রবার দিবাগত রাতে এশার নামাজের প্রস্তুতি নিতে ধর্ষিতা মাদ্রাসা ছাত্রী ওজু করার জন্য ঘরের বাহিরে গেলে ওজু করা অবস্থায় পাশের বাড়ির ধর্ষক লম্পট তাজির গাজি মেয়েটির মুখে গামছা দিয়ে জাপটে ধরে তার নিজ গৃহে নিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষিতা মেয়েটি পুড়াডিসি মহিলা মাদ্রাসার ছাত্রী। নরপশু ধর্ষক তাজির গাজী (৪০) একই গ্রামের ওমর গাজীর ছেলে। এ সময় মেয়েটির পরিবার তাকে ডাক চিৎকার করে না পেয়ে রাতের আঁধারে খুঁজতে থাকে। এক পর্যায়ে পাড়া প্রতিবেশীরাও খুঁজতে শুরু করে এবং ধর্ষিতা ওই মেয়েটির গোঙানোর শব্দ পায় তাজির গাজীর ঘরে। এ সময় এলাকাবাসীর সহায়তায় ধর্ষিতার বাবা-মা তাকে মারাত্মক রক্তাক্ত অবস্থায় তাজীর গাজীর ঘর থেকে উদ্ধার করে। রাতেই শিশুটির বাবা মা তাকে হাসপাতালে আনতে চাইলেও এলাকার প্রভাবশালী তাজির গাজীর লোকজন আনতে দেয়নাই বলে অভিযোাগ করে মেয়েটির মা। তিনি সাংবাদিকদের আরো জানান, লম্পট তাজির গাজীর বাড়িতে ঘটনার সময় তার স্ত্রী বাড়িতে ছিলনা। ঘটনার পরে মেয়েটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য স্থানীয় মাতব্বররা ভিকটিমের পরিবারকে আটকে রাখে। মোটা অংকের টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টাও করে। পরে মেয়েটির অবস্থা বেগতিক দেখে সকালে মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে আনা হলে বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদের নজরে আসে এবং থানা পুলিশের সহায়তায় মেয়েটিকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্র্তি করা হয়। ধর্ষিতা মেয়েটি এখন হাসপাতালের বেডে জীবন বাঁচাতে কাতরাচ্ছে।
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ প্রণয় মান্না দাস বলেন, মেয়েটির অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে। গাইনী চিকিৎসকের সহায়তায় তাকে প্রাথমিক পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং সম্পূর্ণ সুস্থ হতে সময় লাগবে। তার চিকিৎসার কোন প্রকার কমতি নেই। সবসময় চিকিৎসক নার্সদের তদারকিতে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আনিচুর রহমান গতকাল শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে জানান, শনিবার দুপুরে মাদ্রাসা ছাত্রীর মা অভিযোগ করলে আসামী গ্রেফতারের জন্য সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ ধর্ষক তাজির গাজীকে বিকেলেই গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে ধর্ষিতা নিজেই তাজির গাজীকে প্রধান আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ এর ১ ধারায় থানায় মামলা দিলে তা নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে। তাজিরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং ধর্ষিতা মেয়েটিকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।