নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ পৌর এলাকার বাগমামুদালী মৌজায় হাসপাতাল রোডে ২১ শতাংশ জায়গার মধ্যে ১০.৫০ শতাংশ জায়গায় লিজ এনে স্থাপনা নির্মাণ করলেও বাকী ১০.৫০ শতাংশ জায়গার লিজের জন্য আবেদন করলেও ঐ জায়গা সরকার কর্তৃক অবমুক্তি বা প্রত্যার্পণ না পেয়ে বেআইনীভাবে স্থাপনা নির্মাণ করছেন রতন কুমার দাস নামে এক ব্যবসায়ী। এ বিষয়ে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক ও সহকারি কমিশনার (ভূমি)সহ মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এলাকাবাসীর পক্ষে ফারহানা ইসলাম নামে এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।
তার আবেদনপত্র সূত্রে জানা যায়, বাগমামুদালী মৌজায় আর এস ৫৯ আর এস ২৬৪ পরিমাণ ১০.৫০ শতাংশ জায়গা তফসিলভূক্ত অর্পিত সম্পত্তি যাহা হিন্দু প্রজাগণ মালিক ছিলো বলে জানা যায়। কিন্তু প্রজাগণ কাহারো নিকট বিক্রয়, দান কোনরূপ এওয়াজ বদল না করে বহু বছর পূর্বেই এদেশ ত্যাগ করে পাশর্^বর্তী দেশ ভারতে চলে যায়। উক্ত ২১ শতাংশ সম্পত্তি তৎকালীন সময়ে সরকারি নিয়ন্ত্রণে এনে ভিপি কেস নং ১৩১/৭১ এ লিপিবদ্ধ হয়। পরবর্তীতে উক্ত সম্পত্তি হতে ১০.৫০ শতাংশ স্বপন কুমার দাস গং জেলা প্রশাসক কার্যালয় হতে লীজ নিয়ে ইতিমধ্যে ভোগদখলে আছে। কিন্তু স্বপন কুমার দাস গং লীজ ব্যতীত অর্থাৎ অবশিষ্ট ১০.৫০ শতাংশ সম্পত্তিতে কোন রূপ লীজ কিংবা মালিকানা ব্যতীত স্থাপনা নির্মাণ করেছে।
এ অবস্থায় স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিবর্গ বাঁধা দিলে অভিযুক্ত স্বপন কুমার দাস জানান, এই সম্পত্তি মালিকানা তাদের। বৈধভাবেই স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। অবৈধ দখলদারের কাছ থেকে ভূমি উদ্ধারে এলাকাবাসীর পক্ষে দরখাস্তকারী ফারহানা ইসলাম জানান, আমি ভূমিদস্যুদের হাত থেকে শহরের গুরুত্বপূর্ণ জমিটি উদ্ধারে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছি। স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি জমিতে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার জন্য দখলদার রতন কুমার দাস ও স্বপন কুমার দাসকে নোটিশ প্রদান করেছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাজমুল হুদা।
এদিকে এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ সদরের সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. নাজমুল হুদা জানান, ঘটনাটি আমি অবগত হয়েছি। এ সম্পত্তি নিয়ে সরকারের সাথে মামলা চলে আসছে। মামলায় তারা অবমুক্তি পায়নি। তাই সাময়িকভাবে স্থাপনা নির্মাণের কাজটি বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি। আমি মনে করি, তারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন। আর যদি তা না হন তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোঃ আবুজাফর রিপন বিপিএএ বলেন, খাস জায়গায় অনুমতি ছাড়া স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সহকারি কমিশনার (ভূমি)কে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, অর্পিত সম্পত্তি তপসিল ‘ক’ বাগমামুদালী মৌজায় ২১ শতাংশ জমির মধ্যে তাদের লীজকৃত জমিতে ১০.৫০ শতাংশ জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া অবশিষ্ট ১০.৫০ উক্ত জমির উপর কোন প্রকার অনুমতি না নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করে যাচ্ছে। মুন্সীগঞ্জ যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। মামলা চলমান অবস্থায় স্থাপনা নির্মাণ করার বিষয়টি জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।