নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জে ডেঙ্গু জ্বরের কারণে ডাবের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ২শ’ টাকা ছুঁয়েছে ডাবের দাম। গত ৬ মাস আগেও বড় সাইজের একটি ডাব বিক্রি হতো ১শ’ টাকায়। এখন ডেঙ্গু জ্বরের কারণে বিক্রি হচ্ছে ২শ’ টাকায়। ডাবের এ ডাবল সেঞ্চুরিতে অসন্তুষ্ট ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর স্বজনরা। তবে ডাব বিক্রেতারা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলেন, কিনতে হয় বেশি দামে তাই বিক্রিও করতে হয় বেশি দামে।
মুন্সীগঞ্জ শহরের সুপার মার্কেটে ৪০ বছর ধরে ডাব বিক্রি করেন মোঃ সোহরাব হোসেন। তিনি বলেন, প্রতিদিন আড়ৎ থেকে ১শ’ থেকে ১৫০টি ডাব কিনে আনি। এর মধ্য ৫/৬টি ডাবে পানি থাকে না। আড়ৎ থেকে দোকানে আনতে ডাব প্রতি খরচ হয় ১ টাকা। কোন ডাবে লাভ হয় ১৫ টাকা আবার কোন ডাবে লাভ হয় ২০ টাকা। অনেক ক্রেতারা ডাবের দাম শুনেই চলে যায়। আমাদের কেনা বেশি, তাই বিক্রিও করতে হয় বেশি।
আরেক ডাব বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, ২০ বছর ধরে ডাবের ব্যবসা করি। ১শ’ ডাব আনলে ২টা সাইজে বিক্রি করতে হয়। বড় ডাব কেউ কিনতে চায় না, তাই ছোট ডাব বিক্রি করি। ১২০ টাকায় কিনে এনে ১৩০ বা ১৪০ টাকা বিক্রি করি।
বিক্রেতাদের কথায় মোটেও সন্তুষ্ট নন ক্রেতারা। ডাব কিনতে আসা সাকিব মিয়া বলেন, ডেঙ্গুর আগে ডাবের দাম এমন ছিল না। এখন কি ডাবের পানিতে আগুন লেগেছে, যে দাম বাড়াতে হবে?
আরেক ক্রেতা মিলন শেখ বলেন, ১শ’ টাকার একটা বড় ডাব কিনতে হচ্ছে ২শ’ টাকায়। ৮০ টাকার ডাব কিনতে হচ্ছে ১৩০ টাকায়। ১৩০ টাকার নিচে বাজারে কোন ডাব চোখে পড়ে না। এ দামে যেগুলো পাওয়া যায় ছোট-মাঝারি আকারের তাতে তেমন পানিও নেই। বাধ্য হয়েই বড় ডাব কিনতে হচ্ছে ২শ’ টাকায়।
ডাব কিনতে আসা আরেক ক্রেতা রাসেল মিয়া বলেন, দাম বেড়ে যাওয়ায় ডাব খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি কয়েকমাস আগেই। মাঝে মাঝে খেতাম, তাও বন্ধ করে দিয়েছি। ছেলের ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে, ডাক্তার বলেছে ডাব খাওয়াতে। তাই বাধ্য হয়েই ডাব কিনতে এসেছি।
এদিকে ডাবের আড়তদার আলি আজম এন্টারপ্রাইজের মালিক আলি আজমের ছেলে মোঃ আলামিন জানান, ৩০ বছর ধরে পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি থানার বৈঠা কাঠা বাজার থেকে ট্রাকে করে মাসে ২০/২৫ দিন ডাব আসে আমাদের আড়তে। প্রতি ট্রিপে ১৫শ’ থেকে ২ হাজার ডাব আসে ট্রাকে। আমরা বিক্রি করে শতকরা ৬ টাকা থেকে ৮ টাকা পাই। ৩ থেকে ৪ ক্যাটাগরির ডাব আসে আমাদের আড়তে।
ডাবের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, শ্রাবণ মাসে ডাব কম থাকায় চাহিদার সাথে দামও বেড়ে যায়।
মুন্সীগঞ্জ ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক আব্দুস সালাম বলেন, মূল্য তালিকা ও কোথা থেকে ডাব নিয়ে আসছে ডকুমেন্ট দেখাতে না পারায় ২ জনকে জরিমানা করেছি। নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি না করা পর্যন্ত আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।