নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার পদ্মা নদীর তীরবর্তী ৫৭০ জন এলাকাবাসীর গণস্বাক্ষরকৃত উপজেলার মানচিত্র রক্ষায় অবৈধ ড্রেজার ও বাল্কহেডের মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১২টায় উপজেলা অফিসারের কার্যালয়ে এ আবেদন পত্রটি গ্রহণ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাকির হোসেন। এসময় তিনি জানান, নদীতে অবৈধ ড্রেজার ও বাল্কহেডের বিরুদ্ধে তিনি কঠোরভাবে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পর তারা ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার, নদী রক্ষা কমিশন চেয়ারম্যান, মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), লৌহজং থানা অফিসার ইনচার্জের কাছে এ আবেদন পত্রটি দিবেন।
হলদিয়া ইউনিয়নের মোঃ লোকমান, শিমুলিয়া এলাকার আলমগীর পাঠান, তেউটিয়া ইউনিয়নের মোঃ ফারুক মোল্লাসহ ২০ থেকে ২৫ জনের প্রতিনিধিদলের ৫৭০ স্বাক্ষরকৃত আবেদনপত্র থেকে জানা যায়, উপজেলার মানচিত্র রক্ষা করার জন্য অবৈধ ড্রেজার ও বাল্কহেডের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে। পৈতৃক এবং নিজস্ব রেকর্ডীয় ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তির ১০-১২ হাজার একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পদ্মা নদীর ভয়াবহ ভাঙনের ফলে হাজার হাজার পরিবার ফসলি জমি হারায়। জমিহীন সর্বস্বান্ত হয়ে আত্মীয়-স্বজনের আশ্রয়ে এবং রাস্তার পাশে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এছাড়া অসংখ্য প্রাথমিক বিদ্যালয়, খেলার মাঠ, মসজিদ, মাদ্রাসা নদী ভাঙনের শিকার হয়। ২০২০-২০২৩ সালের মধ্যে পুনরায় কয়েকটি এলাকায় বালুচর জেগে ওঠে। তবে রাতের আঁধারে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীরা বাল্কহেড, ড্রেজার ও কাটার দিয়ে পাড় ঘেঁষে মাটি ও বালু কেটে নিয়ে যাচ্ছে এবং বিক্রি করছে। ফলে নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া তারা উল্লেখ করেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশ ছিল যে পদ্মা সেতু পিলারের গোড়ার মাটির সংস্কার করা। তবে দস্যুরা ইচ্ছেমতো যে কোন জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করছে। ভাঙন কবলিত অসহায় ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো মানুষের চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইন-শৃঙ্খলার অবনতির ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে স্থানীয় জনসাধারণ এ নিয়ে মৌখিকভাবে প্রতিবাদ করলেও ড্রেজার মালিকরা কর্ণপাত করছে না।
লৌহজং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ ইলিয়াস সিকদার বলেন, আমরা অবৈধ ড্রেজার ও বাল্কহেড অনেকগুলো আইনের আওতায় এনে জরিমানা করছি। আমরা সাধ্যমত নিয়মিত লক্ষ্য রাখছি। কর্তৃপক্ষের বার্তা আছে কঠোর অবস্থানে পদক্ষেপ গ্রহণ করার।
এ বিষয়ে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাকির হোসেন বলেন, আমিসহ আমাদের প্রশাসনের সকলে কঠোর অবস্থানে আছে। অতি দ্রুত অবৈধ ড্রেজার ও বাল্কহেডের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া সরকার লৌহজং উপজেলায় নদী ভাঙন রক্ষায় বেড়ি বাঁধ নির্মাণ এবং জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরক্ষা বাঁধ তৈরির কাজ করছে। বর্তমানে নদী ভাঙ্গার কোন সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।