নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার প্রধান সড়কের মালিরঅংক বাজার সংলগ্ন বেইলি সেতুর পাটাতন ভেঙে এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। মেয়াদ উত্তীর্ণ নড়বড়ে এই সেতুর পাটাতনে মরিচা ধরে ভেঙে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বেইলি সেতুটি সরু, জরাজীর্ণ ও পাটাতন ভেঙে যাওয়ার কারণে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এতে যাতায়াতকারীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। ভাঙা পাটাতনে যানবাহনের টায়ার আটকে প্রতিদিন কোনো না কোনো দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত সংস্কার ও রাস্তা বা পাকা সেতু নির্মাণের দাবি এলাকাবাসী ও যানবাহন চালকদের।
স্থানীয়দের দাবি, বেইলি সেতুটির নিচ দিয়ে পানি প্রবাহ খাল অনেক আগেই ভরাট হয়ে গেছে। তাই এখানে ব্রিজের প্রয়োজন নেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মাওয়া লৌহজং থেকে টঙ্গীবাড়ী-মুন্সীগঞ্জ যাতায়াতের আঞ্চলিক প্রধান সড়কের মালিরঅংক বাজারের প্রবেশমুখ সংলগ্ন মেয়াদোত্তীর্ণ এই বেইলি সেতুর পাটাতনে মরিচা ধরে ভেঙে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এর ওপর দিয়ে প্রতিনিয়ত হালকা ও ভারী যানবাহন চলাচল করে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে এর মেরামত কাজ না করায় এটি অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে। রেলিংয়ের বিভিন্ন অংশ মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। এই ব্রিজের ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন ও জেলার চার উপজেলার হাজারো মানুষ চলাচল করে। প্রধান এই সড়কের এ সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। এছাড়াও ঢাকা না গিয়ে মাওয়া পদ্মা সেতু থেকে মুক্তারপুর ব্রিজ হয়ে নারায়ণগঞ্জ এবং পূর্ব ও দক্ষিণবঙ্গে যাতায়াতে শর্টকাট রাস্তা হিসেবে কয়েক লাখ মানুষ আসা-যাওয়া করে এ সড়ক পথ দিয়ে। ব্রিজটি সরু হওয়ায় দুটি ছোট গাড়ি পাশাপাশি যেতে পারে না। এতে যানবাহনের জটলা হয়ে যানজট লেগে থাকছে। দীর্ঘ যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। এছাড়া ঘোলতলী বেইলি সেতুর পাটাতনে দুই জায়গায় বড় ধরনের ফাঁকা থাকায় যানবাহন চলাচলে ব্যাহত হচ্ছে ও বর্তমানে ঘোলতলী এ বেইলি সেতুর পাশে পাকা সেতুর কাজ চলমান রয়েছে।
উপজেলার বাসিন্দা লিটন শিকদার জানান, খাল তো ভরাট হয়ে গেছে, এখানে ব্রিজের দরকার কী? ব্রিজ ভেঙে দ্রুত রাস্তা নির্মাণ করে দেয়া হউক।
কুমারভোগ ইউনিয়নের মোটরসাইকেল আরোহী মিজান জানান, লক্কর ঝক্কর এ সেতু দিয়ে ভয় নিয়ে চলাচল করতে হয়।
পথচারী বাসুদিয়া গ্রামের কামাল জানান, এই সেতুটি ভেঙে চওড়া রাস্তা নির্মাণ করে দিলে যানজট থাকবে না।
অটোরিক্সা চালক মোবারক ও শরিফ হোসেন জানান, মালিরঅংক ব্রিজের পাটাতন ভাঙার কারণে লৌহার প্লেটের ফাঁকে পড়ে টায়ার কেটে যায়। তাদের গাড়ির টায়ার অনেকবার নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানান এবং ঘোলতলী বেইলি সেতুর পাটাতনে বড়সড় ফাঁকা থাকায় টায়ার আটকে দুর্ঘটনা ও যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। বেজগাঁও ৪নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. মিজানুর রহমান জানান, সেতুটির পাটাতনের বিভিন্ন অংশ ভেঙে গেছে। সড়ক ও জনপদে যারা আছে সেতুটি মেরামত করে দিলে ভালো হয়। আমি শুনেছি, এখানে পাকা সেতুর জন্য টেন্ডার হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা সড়ক ও জনপথ উপ-বিভাগের প্রকৌশলী সাকিব জানান, মালিরঅংক বেইলি ব্রিজটির বিষয়ে আমাদের রেগুলার মেকানিক পাঠাবো। ভাঙ্গা বা ফাটল বিষয়টি অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
লৌহজংয়ে জরাজীর্ণ বেইলি সেতু যেন মরণ ফাঁদ
আগের পোস্ট