নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে তাবিজ দেয়ার কথা বলে ননদ-ভাবীকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শনিবার রাতে ওই নির্যাতিত কিশোরীর (১৫) বাবা অভিযুক্ত তরুন তালুকদার (৩৮) এর বিরুদ্ধে লৌহজং থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার গাঁওদিয়া ইউনিয়নের কালুরগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। লৌহজং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
কিশোরীর বাবা মো. সেলিম মিয়া গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার বাসিন্দা। দীর্ঘদিন সপরিবারে কালুগাঁও গ্রামে সালমার বাসায় ভাড়া থাকেন। তিনি পেশায় দিনমজুর।
তিনি জানান, কৃষিকাজ শেষে বাড়িতে এসে জানতে পারি একই গ্রামের বাসার পাশের দোকানদার আলাউদ্দিন তালুকদারের ছেলে তরুন তালুকদার আমার কিশোরী মেয়ে (১৫) ও আমার ভাইয়ের ছেলের বৌ (১৮) এর সাথে এসব অপকর্ম করেছে।
ভুক্তভোগী কিশোরী (১৫) বলেন, অভিযুক্ত তরুন তালুকদার মামা আমাকে তাবিজ ও চিরুনি পড়া দেয়ার কথা বলে দোকানের সামনে ডেকে আনে। তখন আমার মুখ চেপে ধরে দোকানের ভেতরে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। আমাকে কাপুড় খুলে বসতে বলে। তখন আমি অসম্মতি করলে আমাকে জোর করে ধরে কাপড় সরিয়ে খারাপ কিছু করতে চায়। আমার সাথে এমন অনেকক্ষণ জোরাজুরি করার পর আমাকে বেঁধে ভাবীকে ডেকে নিয়ে আসে। তার সাথেও খারাপ কিছু করতে শরীরে টাচ করে।
ভুক্তভোগী কিশোরীর ভাবী (১৮) বলেন, আমাকে তরুণ মামা দোকানের সামনে ডেকে নিয়ে আসে এবং জোর করে দোকানের ভেতর নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। সেখানে গিয়ে আমার ননদকে মুখ বাধা অবস্থায় দেখতে পাই। তার শরীরে কাপড় নেই। তরুন তালুকদার আমার সাথেও খারাপ উদ্দেশ্যে জড়িয়ে ধরে। ভুক্তভোগী কিশোরীর ভাবী আরও বলেন, ননদ আমাকে জানায়, আমি এক ছেলেকে পছন্দ করি। কিন্তু ঐ ছেলে আমাকে পছন্দ করে না। তরুন আমাকে বলে ওই ছেলে আমাকে পছন্দ করার জন্য তার কাছে তাবিজ আছে। তরুন আমাকে বলে, তুই গোসল করে ওযু করে আমার দোকানের ভিতর আসিস। তোকে ওই ছেলেকে পাইয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করে দিবো। তখন আমি দোকানে গেলে সে দোকানের দরজা লাগিয়ে দেয় এবং আমাকে সবকিছু খুলে বসতে বলে। তখন আমি বলি, ফকিরের সামনে এমন খুলতে হয় আমি কখনো শুনিনি। আমি পারবো না, তখন আমি চলে যেতে চাইলে আমাকে জোর করে ধরে সব খুলে ফেলে। তখন আমি মামাকে বলি আমি এসব কিছু ভাবীর কাছে বলে দিবো। তখন আমার মুখ বেঁধে ফেলে এবং কাপড় লুকিয়ে রাখে। অনেকক্ষণ পর মামা বলে, তোর ভাবীর কাছে বিচার দিবি বলেছিস দেখ তোর ভাবিকে নিয়ে আসতেছি। তখন তাকে বাঁধা অবস্থায় রেখে দোকানে আটকিয়ে রেখে আমাকে ডেকে নিয়ে আসে। দোকানের দরজা লাগিয়ে দিয়ে বলে, তুই এখানে চুপচাপ বসে থাক। তোর সামনে ওরে কি করি তুই চেয়ে চেয়ে দেখ। চেঁচামেচি করলে তোর সংসার ভাঙ্গমু তখন আমি বাঁধা দিলে আমার সাথেও খারপ আচরণ করে। তখন আমি তরুণের হাতে কামড় দেই ও চিৎকার করলে তরুণ পালিয়ে যায়। আমি তখন তাকে আমার চাদর জড়িয়ে দেই।
এলাকাবাসী জানায়, তরুণ তালুকদার এর আগেও এমন অনেক অপকর্মের সাথে জড়িত ছিল। অনেকে লজ্জায় ও ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায়নি।
এ বিষয়ে গাঁওদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে সালিশের জন্য এসেছিল। আমি তাদের বলে দিয়েছি, নারী নির্যাতনের বিচার আমার পরিষদে হয় না, এটি থানা পুলিশের বিষয়।
৪নং ওয়ার্ড ইউপি মেম্বার মো. মোশারফ হোসেন বেপারী বলেন, ঘটনার একদিন পর জানতে পেরেছি তরুণ তালুকদার একটা মেয়েকে ধর্ষণ করেছে। আমরা চাই এসব জঘন্য কাজের উপযুক্ত বিচারক হউক। তিনি আরও বলেন, এই গ্রামে এর আগেও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিলো যা এলাকার বড় এক নেতার শেল্টারে ধামাচাপা দেয়।