নিজস্ব প্রতিবেদক
গতকাল শনিবার মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে উপজেলা শাখা নদীতে দিনে-রাতে অবৈধ বালুবাহী বাল্কহেডের হিড়িক দেখা যায় বলে অভিযোগ এলাকাবাসী অনেকের। তবে উপজেলা কমিশনার (ভূমি) অফিস শাখার নদীর পাশে অবস্থান, কিন্তু তাদের নেই কোন তৎপরতা এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা। তাদের চোখের সামনে হচ্ছে রমরমা ব্যবসা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লৌহজং-তেউটিয়ার শাখা নদী সংলগ্ন লৌহজং উপজেলা কমিশনার (ভূমি) অফিস। এই পথ দিয়ে বালুবাহী বাল্কহেডগুলোর আসা-যাওয়া। এছাড়া গাঁওদিয়া পদ্মা শাখা নদী হয়ে বালিগাঁও খাল দিয়ে বালুবাহী বাল্কহেড চলছেই। স্থানীয় প্রশাসন নীরব দেখে স্থানীয় অনেকেই প্রশ্ন তুলছে, কি করে সম্ভব হয় দিন-রাত বালু বোঝাই বাল্কহেডের চলাচল? তাদের ধারণা, প্রশাসন বাল্কহেডের মালিকদের সাথে জড়িত আছে। তবে স্থানীয় অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তি প্রকাশ্যেই এ বালু ব্যবসা করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে বলেন, লৌহজংয়ে রাতের আঁধারে আগে বেশি বালুবাহী বাল্কহেডগুলো চলাচল করতো। এখন দেখছি দিনে বালুর ব্যবসা নিয়োজিত বাল্কহেড পদ্মা শাখা নদী দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সবাই দেখে কেউ কিছু বলে না। দেখছি প্রশাসনও নীরব। আমাদের এলাকার নদী ভাঙনের একমাত্র কারণ বালু উত্তোলন। বালুদস্যুদের তৎপরতা যেন থামছে না, দিনে দিনে বেড়েই চলছে। সঠিক কোন আইনি পদক্ষেপের অপেক্ষায় আছি।
জানা যায়, ২০০৮ সালে প্রতি ঘনফুট বালু উত্তোলনের জন্য জেলা প্রশাসকের রাজস্ব তহবিলে ২৫ পয়সা করে রাজস্ব দিতে হতো। আর ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও আয়কর হিসেবে ৩ শতাংশসহ মোট ১৮ শতাংশ টাকা রাজস্ব আসত। এছাড়া প্রতি ঘনফুট বালু উত্তোলনের জন্য বিআইডব্লিউটিএকে দেওয়া হয়েছে ২৫ পয়সা। ২০২১ সাল পর্যন্ত বালু উত্তোলন বাবদ রাজস্ব দিতে হয়। লৌহজংয়ে বালু উত্তোলন ব্যবস্থা থাকলেও সঠিক কোন ব্যবস্থাপনা কার্যকারিতা না থাকায় সরকার বঞ্চিত হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব থেকে।
এ বিষয়ে লৌহজং উপজেলা কমিশনার (ভূমি) মো. ইলিয়াস সিকদার বলেন, আমরা বাল্কহেডগুলোর প্রতি নজর রাখছি। এছাড়া গত সপ্তাহে কিছু বাল্কহেড লোকজনসহ আটক করে জরিমানা করেছি। আমাদের চোখকে ফাঁকি দিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তৎপরতার সাথে কাজ করছে। আমি যথারীতি সাধ্যমত চেষ্টা করছি। এছাড়া তিনি আরো বলেন, আমরা সঠিকভাবে যেকোন অবৈধ কাজের তথ্য পেলে সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। তবে যারা অবৈধ বালু উত্তোলন ও বাল্কহেডের কাজের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা চলমান আছে।