নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কলমা ইউনিয়ন বাজারে প্রবেশপথের পাকা সেতুর পাশে সরকারি খাল দখল করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। বাজারের পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দা মৃত তোতা ফকিরের ছেলে মোঃ রফ ফকিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী ও কলমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী মোঃ মোতালেব শেখ।
শনিবার বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কলমা বাজারে প্রবেশপথের পাকা সেতুর ১৫ ফিট খালের সরকারি জায়গা দখল করে পাকা দোকান তৈরি করা হয়েছে। এতে খালের পানি চলাচলে বাধাগ্রস্ত হয়ে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কলমা বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, গায়ের জোর খাটিয়ে খালের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করছে ভূমিখেকো রফ ফকির। আমরা বেশ কয়েকবার বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেও উল্টো আমাদের মামলা-হামলার ভয় দেখিয়েছে বলে জোরালো প্রতিবাদ করিনি।
তারা আরও জানান, খালের ৬০ ভাগ মুখ বন্ধ করে স্থাপনা নির্মাণের ফলে বর্ষা মৌসুমে পানি প্রবাহের মুখ বন্ধ হয়ে আমাদের বসতবাড়িসহ চাষের জমিতে পানি প্রবাহিত হয়। এতে একদিকে যেমন সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা, অপরদিকে ফসল ক্ষতি হয়ে আমাদের লোকসানের মুখে পড়তে হয়। আমরা এ বিষয় নিয়ে বেশ কয়েকবার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করেও এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিকার পাইনি।
সরকারি খাল দখলের বিষয়টি নিয়ে মোঃ রফ ফকিরের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমি কোন সরকারি খাল দখল করিনি। এই সম্পত্তি আমার নানার বাড়ির সম্পত্তি। আমার মায়ের সম্পত্তি আমি পেয়েছি। বাজারের প্রবেশমুখে পাকা সেতু আমার নিজস্ব জায়গায়। তাকে কাগজপত্র দেখানোর জন্য অনুরোধ করা হলে তিনি কয়েকদিন পর দেখা করে কাগজ দেখাবেন বলে এ প্রতিবেদককে জানান। তিনি আরো বলেন, আমি কোন সরকারি জায়গা দখল করিনি। এটি আমার নানার বাড়ির সম্পত্তি। কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
কলমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী মোঃ মোতালেব শেখ জানান, রফ ফকির সরকারি খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। যা দোকানঘর হিসেবে এখন কাপড়ের ব্যবসায়ীকে ভাড়া দিয়েছেন। এই জায়গাটি সম্পূর্ণ সরকারি জায়গা। স্থানীয় লোকজনকে সাথে নিয়ে তাকে একাধিকবার বলেছি, সরকারি খাদ দখল না করতে। তবে সে আমার কথা রাখেনি। বর্ষা মৌসুম শেষ এখন তার স্থাপনার কারণে পানি নিষ্কাশনে সমস্যা হচ্ছে। হাজারো কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিষয়টি আমি উপজেলা প্রশাসনের কাছে জানিয়েছি। এক ব্যক্তির স্বার্থে খাল দখল এটা গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা খালটি পুনঃখননের দাবী জানাচ্ছি। সেই সাথে অবৈধ দখলদারের উচ্ছেদের অনুরোধ জানাচ্ছি।
লৌহজং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ ইলিয়াস সিকদারকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি বলেন, আমরা এই শুকনো মৌসুমে খাল খননের কাজ হাতে নেব। খালের পার্শ্ববর্তী যেসকল অবৈধ দখল আছে তা আমরা উচ্ছেদ করে ফেলব। সরকারি জায়গা দখলের বিষয়টি আমি অবহিত আছি। খাল খননের সময় এসকল স্থাপনা ভেঙে ফেলা হবে।
লৌহজং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাকির হোসেন জানান, সরকারি খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণের বিষয়টি সহকারী কমিশনার (ভূমি) জানিয়েছেন। আমি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তাকে নির্দেশ প্রদান করেছি।