নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের গাঁওদিয়া ইউনিয়নের ফলপাকর গ্রামের প্রায় ১শত বিঘা জমি ইরি ধান চাষে অনুপযোগী থাকায় অনাবাদির আশঙ্কা। ফলে হতাশ স্থানীয় কৃষক। প্রভাবশালীদের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, লৌহজংয়ের গাঁওদিয়া ইউনিয়নের ফলপাকর গ্রামের বাসিন্দা মোঃ করিম শেখ অভিযোগ করেছেন একই গ্রামের মোঃ জাহাঙ্গীর বেপারীর বিরুদ্ধে। জমির মাটি ভরাটের কারণে কৃষিকাজে ব্যবহৃত সেচযন্ত্র (ডিপ টিউবওয়েল) মাটির নিচে চাপা পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে জমিতে সেচ না পেয়ে এবার ইরি ধান চাষ নিয়ে শঙ্কায় আছেন কৃষকেরা। এলাকার সাধারণ কৃষকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা জানায়, ৩৫ বছর আগে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) আওতায় উপজেলার গাঁওদিয়া ইউনিয়নের ফলপাকর মৌজায় একটি ডিপ টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়। যেখানে প্রায় ১০০ বিঘা জমি এ সেচের আওতায় পানি সেচ সুবিধা পেয়ে আসছে। ফলপাকর গ্রামের মো. করিম শেখ নিজেকে ডিপ টিউবওয়েলটির বর্তমান মালিক বলে দাবি করছেন। তিনি ১০ বছর ধরে ইরি ধান জমির ব্লকে সেচ কাজের দায়িত্ব পালন করে আসছেন বলে জানান।
করিমের অভিযোগ, ডিপ টিউবওয়েলটির পাশের জমির মালিক জাহাঙ্গীর ব্যাপারী নিজ জমি দাবি করে মাটি ভরাট করে সেচ কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন।
তিনি জানান, গত বছর কৃষি মৌসুম শেষে সেচযন্ত্রটির পাশে কৃষিজমির মালিক জাহাঙ্গীর ব্যাপারী খনন যন্ত্র দিয়ে পকেট কেটে তার নিজ জমিটি বর্ষা মৌসুমে ভরাট করে নেয়। এতে সেচের পানি প্রবাহের চ্যানেল ও সেচযন্ত্র ডিপ টিউবওয়েলটি ভরাট হওয়ায় মাটির নিচে চাপা পড়ে যায়। এতে এ ব্লকে ইরি জমিগুলো নিয়ে অনাবাদির শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকেরা।
ভরাটের বিষয়ে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর ব্যাপারী বলেন, ‘ড্রেনলাইন ও সেচযন্ত্রটি আমার জমিতে। আমার জমি আমি ভরাট করেছি। করিম শেখ ডিপ চালাতে চাইলে আশপাশের অন্য কোনো জমিতে বসিয়ে চালাতে বলেন। মাটি ভরাটের সময় তাকে জানিয়েছি, তখন সে ঢাকায় ছিল।’
সেচযন্ত্রের মালিক করিম শেখের অভিযোগ, তাকে না জানিয়ে জাহাঙ্গীর ব্যাপারী ভেঁকু দিয়ে মাটি ভরাট করে ড্রেন লাইন ও ডিপ টিউবওয়েল বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন মাটি সরাতে দিচ্ছেন না।
পানির কারণে জমিতে ধান রোপণ করতে পারছেন না জানিয়ে কৃষক টিপু মুন্সি বলেন, ‘অন্য সব ব্লকে জমিতে ধান রোপণ হয়ে গেছে। সেচ চালু না হলে আমার জমি অনাবাদি রয়ে যাবে।’
কালুরগাঁও গ্রামের কৃষক মো. রাসেদ বলেন, ‘এই ব্লকে আমি আরও আগে ধান রোপণ শেষ করেছি, এখন পানির জন্য জমিতে মাটি ফেটে রয়েছে। রোপণ করা ধানের চারা মরে যাচ্ছে।’
কৃষক মুনছুর বলেন, ‘সেচ চালু না হওয়ায় আমার আট গন্ডা জমিতে এখনও ধান রোপণ করতে পারি নাই’।
গাঁওদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, ডিপ টিউবওয়েলের বিষয়টি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হবে। তবে দীর্ঘদিন হয়ে গেল কোন সমাধান হয়নি।
লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন বলেন, এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি। লিখিত বা মৌখিক কোনো অভিযোগ পেলে সমাধানের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।