নিজস্ব প্রতিবেদক
শ্রীনগর উপজেলার বাঘড়া বাজারে গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বহুতল মার্কেট নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের উপকরণ সামগ্রী। এর আগে নিম্নমানের পাথর ও অন্যান্য উপকরণ সামগ্রী ব্যবহারে পাইলিং কাজ শুরু করা হলে জনমনে প্রশ্ন উঠে। এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠলে স্থানীয় এলজিইডি প্রকৌশলী মো. মহিফুল ইসলাম মাটিযুক্ত নিম্নমানের এসব পাথর পাইলিং কাজে ব্যবহার না করার জন্য ঠিকাদারকে নিষেধ করেন। এরপরেও রহস্যজনক কারণে উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের কার্য-সহকারীদের উপস্থিতিতে নিম্নমানের এসব উপকরণ সামগ্রী দিয়েই চলছে পাইলিংয়ের কাজ।
জানা গেছে, কার্য-সহকারী বাবলুসহ প্রকৌশলী অফিসের অন্য ২ ব্যক্তি ঠিকাদারের কাছ থেকে দৈনিক রোজ হিসেবে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের ছোট ভাই আতাউর হোসাইন খানও এর অর্থ প্রদানের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি আরো বলেন, আগের পাথরই ব্যবহার করছি। পরিষ্কার করে নিচ্ছি। ইঞ্জিনিয়ার যেভাবে বলছেন সেভাবেই কাজ করা হচ্ছে। প্রকৌশলী অফিসের ১ জনকে ২ হাজারের নিচে দেওয়া যায় না। অপরজনকে কম দিলেও হচ্ছে। মুন্সীগঞ্জ থেকে একজন আসেন তাকেও কম দেওয়া যায় না। স্যার যেভাবে বলে দিয়েছেন সেভাবে দেওয়া হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে এ ব্যাপারে জানতে উপজেলা প্রকৌশলী মো. মহিফুল ইসলামের কার্যালয়ে গিয়ে তার সাক্ষাৎ মেলেনি। মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে উপ-সহকারী প্রকৌশলী (মার্কেটটির নক্সাকার) মো. শরিফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাথর যেখানে ফেলা হয়েছিল সেখানে কাদামাটি থাকায় পাথরে ময়লা জমেছে। পাথর-বালু ধুয়ে পাইলিং কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এখন কোন সমস্যা নেই। সাইডে কাজের দেখভালের জন্য অফিসের ৩ জনকে ঠিকাদারের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি খানিকটা নিশ্চুপ থেকে বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকারের (জিওবি) স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ২ কোটি ৫৬ লাখ ৫২ হাজার টাকা চুক্তিমূল্যে বাঘড়া বাজারে মার্কেট নির্মাণের কাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স শাহাবুদ্দিন ট্রেডিং কোম্পানীর কর্ণধার আক্তার হোসাইন খান লাবু। ঠিকাদারের ছোট ভাই আতাউর হোসেন খান বাঘড়া বাজারে নির্মাণাধীন মার্কেটের কাজের দেখভাল করছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে কাজে নিম্নমানের উপকরণ সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়ে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে বিভিন্ন দৈনিক পত্র-পত্রিকায় সচিত্র প্রতিবেদনটি গুরুত্বের সাথে ছাপা হয়। এরপরেও নিম্নমানের এসব উপকরণ সামগ্রী পাল্টানো হয়নি।