নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুল ইউনিয়নের কামারগাঁও আড়িয়ল বিল সংলগ্ন ফসলি জমির মাটি কাটার অভিযোগ উঠেছে। ওই এলাকার টিয়া খানের বাড়ির পাশে বিলের মাটি কেটে মাহিন্দ্রা ট্রলিতে করে পাচার করা হচ্ছে। এসব মাটি বিক্রি করা হচ্ছে অত্র এলাকার বিভিন্ন স্থানে। মাটিখেকো সিন্ডিকেটের সদস্যরা প্রতি ট্রলির মাটি কেনাবেচা করছে ২৫০০-৩০০০ টাকায়। ওই এলাকার মো. কামাল ও রনির নেত্বত্বে কৃষিজমির টপ সয়েল কেনাবেচার অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে এসব মাটির ট্রলির অবাধ যাতায়াতে গ্রামীণ রাস্তাঘাটের ক্ষতি হচ্ছে। মাটি ভর্তি ট্রলির দৌরাত্মে নতুন বাজার, জগন্নাথপট্টিসহ কামারগাঁও সড়কের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হচ্ছে। রাস্তা জুড়ে ধূলা-বালির সৃষ্টি হচ্ছে। এতে সড়কের অবকাঠামো নষ্টের পাশাপাশি সড়কে ধূলার ফলে পথচারীরা স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা জানান, কামারগাঁও টিয়া খানের বাড়ির পাশে স্ক্যাভেটর (ভেঁকু) মেশিন দিয়ে কৃষিজমির মাটি কেটে বিক্রি করছে একটি সিন্ডিকেট মহল। মহলটির মাটির বাণিজ্যের ফলে সরকারি অর্থায়নে নির্মিত রাস্তাঘাট নষ্ট করা হচ্ছে। দিন-রাত সমান তালে অসংখ্য মাহিন্দ্রা ও ড্রাম ট্রাকের যাতায়াতে সড়ক বেহাল করা হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারছেন না।
স্থানীয় কৃষকরা বলেন, যত্রতত্রভাবে ভেঁকু দিয়ে জমি গভীর করে কাটার ফলে পার্শ্ববর্তী ফসলি জমিও ভেঙ্গে পড়ার শঙ্কায় পড়েছেন তারা। মাটি সিন্ডিকেট মহলটি প্রভাবশালী হওয়ায় সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না। সরেজমিনে গিয়েও ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। দেখা গেছে, কৃষিজমি গভীর করে কাটা হচ্ছে। মাহিন্দ্রা ট্রলিতে করে এসব মাটি চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
ট্রলির চালক মতিউর, মামুন ও জাকির জানান, ২৫০০ টাকায় মাটি বিক্রি হচ্ছে। দূরত্ব ভেদে প্রতি ট্রলি মাটির দাম আরো বেশি হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, মো. কামাল মাটি বিক্রি করছেন। তাকে দিনে এলাকায় দেখা যায় না। মামলা থাকার কারণে বেশি একটা বের হন না। তার লোকজনই মাটি বাণিজ্য দেখাশোনা করছেন। অভিযুক্ত মো. কামালের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দম্ভ করে বলেন, আমাদের নিজস্ব জমি কেটে বাড়ি ভরাটের কাজ করছি। মাটি বিক্রি করার সত্যতা পাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি মোবাইল ফোন রেখে দেন।
এ ব্যাপারে ভাগ্যকুল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রতন কুমার সাহা জানান, রাস্তা-ঘাট নষ্ট করায় আমি মৌখিকভাবে তাদেরকে নিষেধ করেছি। তারা কথা শুনছেন না। এখন তাদের দেখাদেখি আরো কয়েকটি গ্রুপ ফসলি জমির মাটি কেনাবেচা শুরু করেছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানাবো।