নিজস্ব প্রতিবেদক
শ্রীনগরে মাদকসেবী ও সন্ত্রাসী বাহিনীকে চাঁদা না দেওয়ায় সম্রাট (৩০) নামের এক সৌদি প্রবাসীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বাঘড়া ইউনিয়নের পূর্ব বাঘড়ায় গতকাল রবিবার বিকাল ৫টার দিকে প্রবাসীর বাড়ির সামনে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেয়। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার ডান হাতে বাহুতে কেটে গভীর ক্ষত হয় ও বামপায়ের পাতায় গুরুতর জখম হয়। সে পূর্ববাঘড়া গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে। তার বড় ভাই আক্তার হোসেন বাদী হয়ে ৭ জনের নাম ও অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামী করে শ্রীনগর থানায় গতকাল রবিবার রাতেই একটি লিখিত অভিযোগ করেন। সম্রাটের বোন বাঘড়া ইউনিয়ন আওয়ামী মহিলা যুবলীগ সভাপতি লাকি বেগম জানান, আমার ভাই আড়াই মাস আগে সৌদি আরব থেকে বাড়িতে ছুটিতে এসেছে। আসার পর থেকেই বিভিন্ন অজুহাতে সম্রাটের নিকট ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। গতকাল (শনিবার) বিকালে চাঁদার দাবীতে একই এলাকার রুবেল (৩০), সুমন (৩২), সবুজ (৩৪), বাবু (২৮), শাকিল চৌকিদার (২৯), রাসেল (২৮), রাব্বি (২৪) সহ অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জন বাড়ির সামনে এসে ধরে নিয়ে যেতে চায়। সে না যেতে চাইলে তাকে লাঠিসোটা, দা দিয়ে মারধর করে। তখন উপায় না পেয়ে বেশ কিছু দূরে একটি বাড়িতে আমার ভাই দৌড়ে আশ্রয় নেয়। এরপর এলাকাবাসী তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমার ভাইকে যারা মারধর করেছে তাদের বিরুদ্ধে শ্রীনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মারধরের দুই দিন আগেও সম্রাটের মোবাইল নম্বরে অপরিচিত একটি নম্বর থেকে কল করে চাঁদার টাকা দাবী করে। বিষয়টি জানাজানি হলে সন্ত্রাসী গ্রুপটি ক্ষিপ্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটায়। এরা একটি সংঘবদ্ধ, চক্র কোন কাজ করে না। কেউ বাড়ি তুললে তাদের টাকা দিতে হয়। বিদেশ থেকে আসলে টাকা দিতে হয়। তাদের এক নেতার ছত্রছায়ায় এলাকায় দীর্ঘদিনে মার্ডারসহ অনেক সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাচ্ছে। প্রশাসনও তাদের কিছু করতে পারে না। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বাররাও তাদের ভয় পায়।
ভুক্তভোগী সম্রাট বলেন, বিভিন্ন সময়ে ফোন করে টাকা পয়সা দাবী করে আসছিল সুমন, সবুজ ও রুবেল। তাদেরকে চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করি। পরে গত শনিবার বিকালে আমার বাড়ির পাশে ৪০/৫০ ফুট দূরত্বে একটি ক্লাবের সামনে তারা আমার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। আমি প্রতিবাদ করলে মুহুর্তের মধ্যে ১০/১২ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমার ওপর হামলা চালায়। সম্রাটের বৃদ্ধ পিতা আলহাজ আব্দুল সালাম (৭৫) দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছেন। অভিযুক্ত সুমনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সম্রাট আমাদের প্রতিবেশী। তার সাথে সখ্যতা থাকায় একটি মেয়েলী সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে তাকে ডাক দেই। তখন সে দ্রুত স্থান ত্যাগ করতে গিয়ে পড়ে যায় এবং পায়ে ব্যাথা পায়। এখানে কেউ চাঁদা দাবী ও মারধর করেনি। এ ব্যাপারে শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হেদায়াতুল ইসলাম ভূইয়া জানান, অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তাদের মধ্যে পূর্বশত্রুতা আছে। আর মেয়েলী একটি ঘটনাও জড়িত রয়েছে। তদন্ত চলছে, তদন্ত রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত বলা যাবে ও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।