নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুল ইউনিয়নের মান্দ্রা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কমিটির পক্ষে মিথ্যা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় এলাকায় তুমুল ক্ষোভ বিরাজ করছে। যেকোন সময় সংঘর্ষের সম্ভাবনা। সম্প্রতি মসজিদ কমিটির সভাপতি বজলুর রহমান সরদার ও মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদ সদস্য মিটুলের সাথে মসজিদের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মিটুলের উপর হামলার চেষ্টা করলে সে শ্রীনগর থানায় ফোন দেয়। তখন সেখানে শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেদায়েতুল ইসলাম ভূঞা ঘটনাস্থলে যায় এবং বিরোধ মীমাংসার জন্য উভয়পক্ষকে গত ২ আগস্ট সোমবার থানায় ডাকে।
জানা যায়, নির্ধারিত তারিখে উভয়পক্ষ থানায় এসে উপস্থিত হলে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেদায়েতুল ইসলাম ভূঁইয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে একটি প্রোগ্রামে যাওয়ায় সেদিন কোনো সমাধান হয়নি। তবে সমাধান না হলেও এলাকায় শান্ত পরিবেশ বিরাজমান ছিল। গত ৩ আগস্ট মসজিদ কমিটির সভাপতির ছেলে মাহবুব রনী তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দিলে এলাকাবাসী তাতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
Mahabub rony তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ভাগ্যকুল মান্দ্রা এলাকার সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, দয়া করে অপপ্রচারকারীদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভিত্তিহীন মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত হবেন না। কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংক্রান্ত চলমান পরিস্থিতি নিয়ে গত ২ আগস্ট সোমবার শ্রীনগর থানার ওসির নিকট বর্তমান কমিটি (সভাপতি, সেক্রেটারি ও ক্যাশিয়ার) এ যাবতকালের হিসাবের খাতা নিয়ে সাক্ষাৎ করে এসেছেন। সেখানে হিসাবের খাতা পর্যবেক্ষণ করে ওসি নিজে কোনো প্রকার টাকা পয়সার হেরফের/ দুর্নীতি খুঁজে পাননি। বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে কুচক্রীমহলের মিথ্যা অভিযোগগুলো তিনি বুঝতে পারেন এবং এর পেছনে কোনো স্বার্থান্বেষী মহলের তৎপরতা রয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণা পোষণ করেন। সেই সাক্ষাতের একপর্যায়ে শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী তোফাজ্জল হোসেন থানা প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি সরাসরি পর্যবেক্ষণ করেন। বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান কমিটিকে তাদের নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন এবং আভিযোগ উত্থাপনকারী মহলের নেতা মনির হোসেন মিটুলকে সরাসরি টেলিফোন কলে নির্দেশনা দেন যে, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজে উক্ত মসজিদে উপস্থিত থেকে এলাকার মুসল্লিদের নিয়ে বিষয়টি সুরাহা বা নিষ্পত্তি করে দিবেন এবং এ বিষয়ে যারা এলাকায় এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে মিথ্যাচার করেছেন বা করছেন তাদের এমন ভিত্তিহীন মিথ্যাচার না করার কথা বলেন। অতএব যারা এলাকায় বা ফেসবুকে ভিত্তিহীন মিথ্যাচার করছেন তাদের প্রতি অনুরোধ রইলো আপনারা দয়া করে আর কোনো অপপ্রচার, মিথ্যাচার করবেন না। এর জবাবদিহি কিন্তু করতে হবে, হয় এপারে নয়তো ওপারে।
এই স্ট্যাটাসে Md Rajan Hawlader নামে একজন কমেন্টে লেখেন, ভাই কিছু মনে করবেন না। মসজিদের খরচের খাতা থানার ওসির কাছে কেন হিসাব দিতে হবে? ওসি সাহেব তো মসজিদের কেউ না, আর না সে সভাপতি সাহেবের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ যারা করেছেন তাদেরকে হিসাব বুঝিয়ে দিন। তাহলেই তো হয়ে যায়। তখন দেখবেন আপনাআপনিই ফেসবুকে সভাপতি সাহেবের বিরুদ্ধের পোষ্ট করা বন্ধ হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে মসজিদ কমিটির ক্যাশিয়ার রিপন বলেন, সেদিন ওসি সাহেবের আসতে দেরি হওয়ায় একটি পক্ষ চলে যায়। তাই ওসি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদককে মীমাংসার জন্য বলেন। কেউ কোন খাতা দেখেনি, এটা সমাধান হয়ে যাবে। মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক রফিক বলেন, থানায় কোন খাতাপত্র দেখানো হয়নি। ইউএনও এবং ওসি এলাকায় সবাইকে শান্ত থাকতে বলেছে।
শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেদায়েতুল ইসলাম ভূঞা বলেন, আমি ব্যস্ততার কারণে উনাদের সাথে বসতে পারিনি। তবে ইউএনও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে দায়িত্ব দিয়েছে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য। স্ট্যাটাসের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়টি আমি অবগত নই।