নিজস্ব প্রতিবেদক
২০২৩ সালে বহুল প্রত্যাশিত সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের ১৮ বছরের বেশি বয়সী সব নাগরিককে পেনশন সুবিধার আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রকল্পটি চালু করা হয়েছে। তবে শ্রীনগরে এখনো মানুষের মধ্যে তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা।
মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ মানুষই এই পেনশন ব্যবস্থা সম্পর্কে তেমন কিছুই জানেন না। সাধারণ মানুষের মধ্যে এই সর্বজনীন পেনশন নিয়ে নেই কোনো কৌতূহল।
আনোয়ার নামে এক চায়ের দোকানি বলেন, আমরা চা বেচে খাই। আমরা এই পেনশন সম্পর্কে কিছুই জানি না। আমাদের কোনদিন কেউ এ সম্পর্কে বলেওনি, আমরা শুনতেও যাইনি।
আসমা নামে এক গৃহিণী বলেন, পেনশন পাবে সরকারি চাকরিজীবীরা। আমরা তো চাকরি করি না, আমাদের আবার কিসের পেনশন?
আমিনা বেগম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে পোস্টার দেখছিলাম। বিস্তারিত কিছু জানি না। কাউকে করতেও শুনিনি।
ঝালমুড়ি বিক্রেতা মোসাদ্দেক বলেন, আমি মুর্খ মানুষ এতকিছু তো বুঝি না। আপনার কাছে পেনশনের কথা শুনলাম। এর আগে কোথাও শুনিনি।
সাজ্জাদ হোসেন নামে এক বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, এই সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা যখন চালু হয় তখন বেশ ফলাও করে প্রচার করা হয়। প্রথমে মনে করেছিলাম সকলে যদি যুক্ত হয় আমিও এই স্কিম গ্রহণ করবো। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার বন্ধু-বান্ধব তো দূরের কথা কোন আত্মীয়-স্বজন কাউকে এই স্কিম গ্রহণ করতে শুনিনি। তাই আমিও আর এ বিষয়ে আগ্রহ দেখাইনি।
জাহিদ হাসান নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এখন এমনিতেই মানুষের অবস্থা খারাপ। তাদের যতটুকু সঞ্চয় আছে তা হাতছাড়া করতে চায় না। দেশে এত ব্যাংক রয়েছে কিন্তু মানুষ শুধু সেখানেই টাকা রাখেন যেখানে তার বিশ্বাস ও আস্থা রয়েছে।
সর্বজনীন পেনশনের আওতায় সকলেই। ১৮ বছরের উপরে দেশের যে কোন নাগরিক এই পেনশন ব্যবস্থায় যুক্ত হতে পারবেন- এর জবাবে সিনথিয়া রহমান বলেন, যা সম্পর্কে মানুষের ন্যূনতম ধারণা নেই সেখানে তার সারা জীবনের কষ্টে অর্জিত টাকা কিভাবে জমা করবে?
সাবেক স্কুল শিক্ষিকা শাহরিয়ার সুলতানা বলেন, আমি মনে করি, সর্বজনীন পেনশন সরকারের একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। সর্বজনীন পেনশনের কথা মানুষের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে মা সমাবেশ হয়ে থাকে। সেখানে সর্বজনীন পেনশন বিষয়ে মায়েদের সাথে কথা বলা যেতে পারে। প্রতিটি ইউনিয়নে একটি টিম করে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে মানুষকে অবগত করা যেতে পারে। আমাদের মনে রাখতে হবে, প্রচারে প্রসার।