নিজস্ব প্রতিবেদক
আগামী ২৯ মে শ্রীনগর উপজেলায় ৬ষ্ঠ ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা যখন তুঙ্গে, ঠিক সেই মূহুর্তে শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোশারেফ হোসেন এর বক্তব্যে উপজেলা রাজনৈতিক অঙ্গনে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। গত শনিবার বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে মাসিক আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে শুধু ইউপি চেয়ারম্যানদের নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোশারেফ হোসেন জনপ্রতিনিধিগণ উপজেলা নির্বাচনে কোনরূপ প্রচার-প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না বলে মৌখিক নির্বাহী আদেশ প্রদান করেন। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
উপজেলা নির্বাচন সংক্রান্তে গত ১৬ এপ্রিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ও তাদের পদমর্যাদা, সরকারি সুযোগ-সুবিধা কোন প্রার্থীর নির্বাচনী কাজে ব্যবহার করতে পারবে না। তবে তারা কোনরূপ অংশগ্রহণ করতে পারবেন না -স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় হতে এমন নির্দেশনা না থাকলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোশারেফ হোসাইন এর এমন বক্তব্যে আসন্ন শ্রীনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। ইউএনও’র এমন নির্বাহী আদেশের পরপরই হাঁসাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোলায়মান খান তার পরিষদকে এমন আদেশ বাস্তবায়নে ইউপি সচিবকে একটি অডিও বার্তায় বলেন, আজ আইন-শৃঙ্খলা মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে, নির্বাহী আদেশ দিয়েছে। আমাদের আদেশ দেওয়া হয়েছে, আমরা কোন প্রার্থীর পক্ষে সরাসরি নির্বাচনী প্রচারণায় কাজ করতে পারবো না এবং সরকারি পদমর্যাদা ব্যবহার করে কোন কাজ করতে পারবো না। আমাদের পরিষদের কোন কর্মচারী এবং মেম্বাররা পদ ব্যবহার করে কোন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা করতে পারবে না। সকল মেম্বার নিয়ে নিশ্চিত হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করতে হবে। নিদের্শনায় উপজেলা নির্বাচনে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এবং সদস্যদের অংশগ্রহণ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যান জানান, ইউএনও স্যার স্থানীয় মন্ত্রণালয়ের বাহিরে গিয়ে চেয়ারম্যানদের উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে প্রচারণা করতে নিষেধ করেছেন। যাহা জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের সাথে ইউএনও স্যারের বক্তব্যে মতপার্থক্য রয়েছে।
জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের ব্যাপারে শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোশারেফ হোসাইন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের যে আদেশ সেখানে উল্লেখ আছে, উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা তাদের পদমর্যাদা বা সরকারী কোন সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি কোন প্রার্থীর প্রচারণা কাজে ব্যবহার করতে পারবে না।
উপজেলা নির্বাচন কমিশনার ফখরুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের নির্বাচনী প্রচারণার ব্যাপারে আমাদের কাছে কোন প্রজ্ঞাপন নেই। এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকারের কি প্রজ্ঞাপন আছে সেটা আমাদের কাছে নেই। সেটা স্থানীয় সরকারের ব্যাপার।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদ আহম্মেদ বলেন, আইনের বিভিন্ন ব্যাখ্যা রয়েছে। সেক্ষেত্রে স্থানীয় এমপি ও মেয়রদের উপজেলা নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় বাধা রয়েছে।
জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের ব্যাপারে যুগ্ম সচিব মোঃ মাসুম পাটোয়ারী বলেন, আমি এখন ট্রেনিংয়ে আছি। নির্বাচন কমিশনের আচরণ বিধিতে যা আছে, সে অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালিত হবে।