নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার সৈয়দপুর কেসি রোড সংলগ্ন ফসলি জমিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে সিসা তৈরির কারখানা। পুরনো ব্যাটারি পুড়িয়ে সিসা তৈরি করায় দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। সিসা তৈরির কারখানার বর্জ্যে হুমকিতে রয়েছে জনস্বাস্থ্য।
জানা গেছে, সিরাজদিখান উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের নয়ানগর গ্রামের তুরিনের বাড়ি সংলগ্ন ফসিল জমিতে ২ মাস আগে সিসা তৈরির এই কারখানাটি স্থাপন করে ডালিম নামে এক ব্যক্তি। প্রায় ১৫ শতাংশ জমিতে এটি স্থাপন করা হয়। বিভিন্ন জায়গা থেকে পুরনো ব্যাটারি কিনে এখানে এনে ভেঙে প্লাস্টিক আলাদা করে সিসা সংগ্রহ করে তারা। প্রতিদিন রাত ১১টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ব্যাটারির প্লেট পুড়িয়ে সিসা তৈরি করা হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, একটি পাকা স্থানে দুইটি গর্ত করে চুলা তৈরি করা হয়েছে। সেখানে জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ব্যাটারি পোড়ানো হয়। কারখানায় পুরনো ব্যাটারি, ভেঙে ফেলা ব্যাটারির স্তুপ করা হয়েছে।
সৈয়দপুর এলাকার স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, এই কারখানার জন্য কৃষি ও গো-চারণ ভূমি, জলাশয়ের পানি ও মানুষের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। কোনো বর্জ্য শোধনাগার (ইটিপি) ছাড়া উন্মুক্ত স্থানে ব্যাটারি গলানোর ফলে সিসাসহ দূষিত অন্যান্য বর্জ্য ছড়িয়ে আশপাশের ঘাস ও পানিতে বিষক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
কারখানার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা মোমেন বলেন, আমি শুধু দিনের বেলায় এখানে পাহারা দেই। যারা কাজ করে তারা রাতের বেলায় আসে। সারারাত কাজ করে সকালে পিকআপে করে মালামাল নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, সিসা গলানোর কারখানার জন্য এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এতে করে মানুষের স্বাস্থ্য খুব ঝুঁকিতেও রয়েছে। সাবেক এক মেম্বারের ছেলে ডালিম কারখানা পরিচালনা করে। তাদেরকে নিষেধ করলেও তারা কারো কথাই তোয়াক্কা করছে না।
অভিযুক্ত ডালিম বলেন, কারখানাটি আমার না। আমি শুধু জায়গাটি ভাড়া দিয়েছিলাম। বর্তমানে কারখানাটি বন্ধ আছে।
কারখানার মালিক জাইদুল শেখ বলেন, কারখানাটির মালিক আমি। তবে আজকে থেকেই কারখানাটি বন্ধ করে দিব।
সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ বলেন, বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। কারখানার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।