নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার চরবিশ্বনাথ কালারায়ের চর গ্রামের প্রায় তিন হাজার একর কৃষিজমিতে গড়ে তোলা হচ্ছে বিক্রমপুর মডেল টাউন আবাসন প্রকল্প। এজন্য ওই গ্রামের তিনটি মৌজা জুড়ে চলছে সাইনবোর্ড লাগিয়ে জমি ভরাটের প্রস্তুতি। এরই মধ্যে প্লটও বিক্রি হয়ে গিয়েছে। বাকি জমিতে কৃষিকাজ বন্ধের পথে।
স্থানীয় বাসিন্দা এবং সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, বিএনপি নেতা মোঃ নাদিমের প্রশ্রয়ে বল প্রয়োগের মাধ্যমে কৃষিজমি দখল করে প্রকল্পটি গড়ে তোলা হচ্ছে। খোদ আবাসন প্রকল্পের স্বত্ত্বাধিকারীও স্বীকার করেছেন, গণপূর্তের অনুমোদন ছাড়াই এটি গড়ে তোলা হচ্ছে। এমনকি এ ধরনের আবাসন প্রকল্পে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেয়ার নিয়ম থাকলেও সেটিও নেয়া হয়নি। সিরাজদিখানের তিন ফসলি কৃষিজমিতে এজন্য কৃষি দপ্তর বা কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি।
জানা গেছে, আগের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বদলি হয়ে যাওয়ার পর আবার প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, সিরাজদিখান বাসাইল ইউনিয়নের চরবিশ্বনাথ এলাকায় সড়কের পাশে কৃষিজমিতে এই প্রকল্প গড়ে উঠছে। এসব জমিতে এখনো আউশ, আমন ও বোরো ধান চাষ হচ্ছে। জমিতে বিক্রমপুর মডেল টাউন আবাসন প্রকল্প নামে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোঃ নাদিম ফোন সিভি করেননি
ওই এলাকায় প্রকল্পের একটি কার্যালয় রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার পর নতুন করে চালু হওয়ার পর কার্যালয়টিতে সার্বক্ষণিকভাবে ১০-১৫ জন যুবককে আড্ডা দিতে দেখা যায়। কার্যালয়ে গিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে চাইলে আব্দুল মজিদ নামে এক ব্যক্তি বের হয়ে আসেন। তিনি বলেন, আমাকে বলেন। আমি কোনো পদে নাই। আমাদের এখন পর্যন্ত জমি ভাড়া নিয়ে সাইনবোর্ড লাগিয়ে কিছু প্লট বিক্রি হয়েছিল। তার মধ্যে অনেকে আবার টাকা নিয়ে গেছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, আগে যারা বিক্রমপুর মডেল টাউন আবাসন প্রকল্প বন্ধের জন্য আন্দোলন করেছিলেন এখন তারা মুখ বন্ধ রেখেছেন। ভয়ে স্থানীয় কৃষকেরাও মুখ খুলছেন না। স্থানীয় একাধিক কৃষকদের অভিযোগ, আশপাশের জমি কেনার পর প্রতিষ্ঠানটি এখন তাদের জমি বিক্রি করতে বাধ্য করছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ শুভ্র বলেন, আইনে আছে কৃষিজমি অকৃষি জমিতে রূপান্তরের জন্য অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু বিক্রমপুর মডেল টাউন আবাসন প্রকল্প এজন্য আমার কাছে আসেনি।