নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার কৃষিনির্ভর শেখরনগর কৃষ্ণনগর সিঙ্গারডাক এলাকার শত শত আবাদি জমিতে অবৈধ পুকুর কেটে কৃত্রিম খাল খনন করে চলেছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের মদতে। মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের শেখরনগর ইউনিয়নে আইনের তোয়াক্কা না করে স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রির মহোৎসব চলছে। এতে উর্বর ফসলি কৃষিজমির পরিমাণ ব্যাপক হারে কমে জাতীয় ফসল উৎপাদনে ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে এ অঞ্চলের কৃষক। অনেকটা জোরজুলুম ও প্রভাব খাটিয়ে কেটে নেয়া হচ্ছে ফসলি জমির এসব মাটি। ফলে কমছে ফসল আর বেকার হচ্ছে কৃষক। পরিবেশও পড়ছে হুমকির মুখে। উপজেলার শেখরনগর ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর ও সিঙ্গারডাক মৌজার এ পর্যন্ত প্রায় চারশত বিঘা ফসলি জমির মাটি কেটে মাটি ড্রাম ট্রাক ও মাহেন্দ্র যোগে প্রতি গাড়ী ২২শত থেকে ২৫শত ইটের ভাটাসহ বিভিন্ন বাসাবাড়ীতে বিক্রি করা হচ্ছে। এখনও চলেছে মাটি কাটার মাটি কাটার হিড়িক। ফলে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিপণ্য উৎপাদন ক্ষমতা। এ অঞ্চলে প্রচুর ফসলী জমি রয়েছে। প্রতি বছর পর্যাপ্ত ফসলও হয়। এ থেকে কৃষকের আয় রোজগারও ছিল অনেক ভাল। কিন্তু গত কয়েক বছর যাবত শেখর নগর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের একটি প্রভাবশালী চক্র কৃষকদের বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও বিভিন্ন লোভ-লালসা দেখিয়ে সামান্য মাটির কথা বলে জমিতে মাটি কাটতে শুরু করে। কিন্তু একবার জমিতে মাটি কাটা শুরু করতে পারলেই তাদের আর ঠেকায় কে! পুরো জমিটি তাদের দখলে চলে যায়। তারা মাটি কাটার মেশিন (ভ্যাকু) বসিয়ে পুরো জমি ১২ থেকে ১৫ ফুট গভীরভাবে কেটে নিচ্ছে, তাতে পার্শ্ববর্তী জমির মাটিও কয়েক ঘন্টার মধ্যে ভেঙ্গে পড়তে শুরু করে। তখন পার্শ্ববর্তী জমি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ওই জমির মালিকও তখন তার জমি ওই ভূমিদস্যুদের কাছে চাপে পড়ে লামছাম মূল্যে জমিটির মাটি বিক্রি করতে বাধ্য হয়। এ বছরসহ গত কয়েক বছরে এভাবে মাটি কাটায় ওই এলাকার শত শত বিঘা জমি এখন খালে পরিণত হয়েছে। ভূমিদস্যু এই চক্রটি এতই প্রভাবশালী যে, তাদের ভয়ে কোন জমির মালিক কিছু বলতে সাহস পায় না। অথচ আইনে ধারা ৫ এর ১ উপধারা অনুযায়ী এসব অপরাধীর শাস্তি হচ্ছে অনধিক দুই বছরের কারাদন্ড বা দুই লক্ষ টাকা অর্থদন্ড বা উভয়দন্ডে দন্ডিত হবেন। সরেজমিনে উপজেলা সহকারী ভূমি অফিসার আসলেই জমি পুকুর হওয়ার দৃশ্য দেখতে পাবেন। এ ব্যাপারে শেখরনগর ইউনিয়নের সহকারী তহলিদার শারপিন ঢালীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আমার উপজেলার অফিসারদের সাথে কথা বলে আগামীকাল ব্যবস্থা নিচ্ছি। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আহম্মেদ সাব্বির সাজ্জাদ বলেন, বিষয়টি সত্যি হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।