নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান সহকারি কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাবিবা ফারজানা গত জানুয়ারীতে যোগদানের পর থেকে সপ্তাহে দুইদিন সোমবার ও বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত গণশুনানী করছেন। এতে করে দীর্ঘদিনের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা হচ্ছে এবং নতুন মামলা যাচাই বাছাই করে গ্রহণ করায় মামলার জট কমে এসেছে। এ কারণে জমিসংক্রান্ত নানা জটিলতায় ভুক্তভোগী জনগণ এখন সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তবে সিটিজেন চার্টার পুরাতন, লেখা ছোট ও বুঝা যায় না এবং আগের অফিস কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পরিচিতি একটা বোর্ড রয়েছে এগুলো পরিবর্তন করলে মানুষ আরো উপকৃত হবে বলে জানা যায়।
উপজেলা সহকারি কমিশনার অফিস সূত্রে আরো জানা যায়, গত ২০১৫ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ১৫ শতাধিক নামজারী, তদন্ত প্রতিবেদন ও মিসকেস মামলা পেন্ডিং হয়েছিলো। এসময়কালে এখানে ৪ জন সহকারি কমিশনার যোগদান করলেও পুরাতন মামলার ফাইল দিন দিন বেড়েই চলছিলো। বর্তমান সহকারি কমিশনার যোগদানের পর এ মামলাগুলো বেশিরভাগ নিষ্পত্তি হয়েছে। যোগদানের পর থেকে সপ্তাহে দুইদিন গণশুনানীর মাধ্যমে কমপক্ষে ৩০টি করে ৬০টি চলমান ও পুরাতন মামলা নিষ্পত্তি করেছেন। ভূমি অফিসের সামনেই প্রায় ৭ বছর আগে জেলা প্রশাসক সাইফুল হাসান বাদল একটি টিনশেড ভবন করেছিলেন অন্য ভুবন লাইব্রেরী নামে। যেখানে বসে বিশ্রাম ও বই পড়তে পারবেন ভূমি অফিসে কাজে আসা অপেক্ষমান জনগণ। প্রথমে ঠিকঠাক থাকলেও প্রায় ৩ বছরের বেশি সময় ধরে সেটি বন্ধ ও পরিত্যক্ত হয়েছিলো। সেই কক্ষটি তিনি পরিচ্ছন্ন করে জনগণের সুবিধার জন্য গণশুনানী সকলের সামনে পরিচালনা করছেন, যাতে করে কার কি সমস্যা সেটা তারা বুঝতে পারেন।
নানা সমস্যা নিয়ে ভূমি অফিসে আসা অনেকে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে জানান, এই এসিল্যান্ড উম্মে হাবিবা ফারজানা এখানে আসার পর সাধারণ মানুষের ভোগান্তি অনেকটাই কমেছে। নামজারী ও শুনানী অনেক দ্রুত ও কম সময়ের মধ্যে হয়, মামলাগুলোও নিষ্পত্তি হচ্ছে। আমরা সাধারণ মানুষ খুব উপকৃত হচ্ছি। কেউ জানান, এখানে আগে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হতো। তিনি আসার পর অতিদ্রুত মামলাগুলো নিষ্পত্তি হচ্ছে। এজন্য তাকে ধন্যবাদ জানান। তবে তারা আরো জানান, এখানে আগের একটা সিটিজেন চার্টার আছে লেখাগুলো খুব ছোট এবং বোঝা যায় না। আরো একটি বোর্ড আছে আগের স্টাফদের। এগুলো পরিবর্তন করে নতুন দিলে মানুষ আরো উপকৃত হবে।
এ বিষয়ে সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবিবা ফারজানা জানান, আমার আগে থেকেই ইচ্ছা ছিলো গণশুনানীটা যেন উন্মুক্ত পরিবেশে হয়। যাতে জনগণ দেখতে পারে কি হচ্ছে, তাদের মধ্যে যে আশঙ্কা থাকে তা থেকে মুক্ত হতে পারে। শুনানীটা এমনটা নয় যে ডেট দিয়ে দিলাম। আমি প্রতি শুনানীর দিতে ৩০টির মত মামলা শুনানী করে থাকি, আমি তাদের কথা শুনি। যত দ্রুত অল্প সময় বা অল্প দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করা যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। সেই ২০১৬-১৭ বা তার আগের মামলাগুলোও আলাদা করেছি। সেগুলো দ্রুত শেষ করা এবং নতুন মামলার ক্ষেত্রে যাচাই বাছাই করে যে কেসগুলো দরকার সেগুলো নিচ্ছি। বোঝা বাড়তে থাকবে, কেস শেষ করতে পারবো না, এমনটা না। আমি পুরনো কেসগুলোরও জনগণের সামনে আদেশ দিচ্ছি। তারা জানতে পারছেন কে কি কারণে পাচ্ছেন বা পাচ্ছেন না, বাদী বা বিবাদী কার পক্ষে কি কারণে যাচ্ছে। কি কারণে প্রতিকার দিতে পারলাম বা পারলাম না, যাতে করে তারা সন্তুষ্ট থাকে।