নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদী উত্তাল হয়ে উঠেছে। আর সেই উত্তাল মেঘনায় মুন্সীগঞ্জ সদরের চর কিশোরগঞ্জ ও গজারিয়া লঞ্চঘাট নৌরুটে ঝুঁকি নিয়ে খেয়া পারাপার হচ্ছে সাধারণ জনগণ।
জানা যায়, জেলা শহর থেকে গজারিয়া উপজেলার দূরত্ব মাত্র ৭ কিলোমিটার। কিন্তু মুন্সীগঞ্জ সদর ও গজারিয়া উপজেলাকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে মেঘনা নদী। সেতু কিংবা সড়কপথের যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে মেঘনা নদী পাড়ি দিয়ে যাওয়া-আসা এ উপজেলার সাধারণ জনগণের। তবে কেউ যদি মেঘনা নদীকে এড়িয়ে যাতায়াত করতে চান তাহলে তাকে অন্তত ৭৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে আসতে হবে। কেননা জেলা শহর থেকে নারায়ণগঞ্জ শহর ও সোনারগাঁও উপজেলা ঘুরে জনসাধারণকে গজারিয়ার গন্তব্যে পৌঁছাতে হবে।
এদিকে মেঘনা নদী পাড়ি দিতে গজারিয়া-চর কিশোরগঞ্জ নৌরুটে একমাত্র ভরসা ইঞ্জিনচালিত নৌকা। এ নৌপথে ২৫ থেকে ৩০টি ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে চলাচল করে থাকে। আর এসব ইঞ্জিনচালিত ট্রলারগুলোর একটিতেও নেই বায়া লাইফ জ্যাকেট। ফলে কালবৈশাখী ঝড়ে যেকোন মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা। জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ না থাকায় জেলার অপর পাঁচটি উপজেলার সাথে জেলা শহরের পূর্বাঞ্চলের গজারিয়াকে মেঘনা নদী বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। এতে করে জেলার পাঁচটি উপজেলার সঙ্গে গজারিয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। নৌপথ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অনেকেই দীর্ঘ পথ অতিক্রম ও অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ হয়ে মুন্সীগঞ্জে আসা-যাওয়া করে থাকেন।
এ পথ ব্যবহারকারী সালমা নামে একজন পথচারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার মামলা মোকাদ্দমা থাকার কারণে মাসে দু’একবার মুন্সীগঞ্জ আদালতে যেতে হয়। দোয়া দরুদ পড়ে চোখ বুজে নদীটা পার হই। আমি প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি, মানুষকে যেন এ নদী পার হওয়ার নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
মুনতাহা নামে আরেকজন বলেন, আমার শ্বশুরবাড়ি মুন্সীগঞ্জ। আমার বাবার বাড়ি আসতে হলে এই নদী পার হয়ে গজারিয়া আসতে হয়। বাচ্চাদের সাথে নিয়ে জীবনটা হাতে নিয়ে নদীটা পার হতে হয়।
সানাউল্লাহ নামের এক বৃদ্ধ কৃষক বলেন, আমার জমিসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একটু ঝামেলা। তাই আমি মুন্সীগঞ্জ কোর্টে যাচ্ছি। অনেক কষ্ট করে নদীটা পার হলাম।
এ পথ ব্যবহারকারী অনেকেই আবার এ দাবিও তুলেছেন যে, আবার আগের মত ফায়ার সার্ভিস চালু করা হোক যাতে দূর্ঘটনা হওয়ার সাথে সাথে সাহায্যকারী দল এগিয়ে আসতে পারে।
এ বিষয়ে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বয়া এবং লাইফ জ্যাকেট দেওয়া হয়েছিল। যদি ব্যবহার না করে থাকে তাহলে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।