নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, ৩রা নভেম্বরের জেলহত্যাকান্ডে জড়িত খুনিদের হাতে গড়া সংগঠন এবং খুনিদের পৃষ্ঠপোষক ও উত্তরসূরী বিএনপির বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এই অপশক্তিই বাংলাদেশের অগ্রগতি এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক রাজনীতি প্রতিষ্ঠার প্রধান প্রতিবন্ধক।
গতকাল ৩রা নভেম্বর বৃহস্পতিবার জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে মুন্সীগঞ্জ শহরে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা কৃষক লীগ সভাপতি মহাসীন মাখন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আল মাহমুদ বাবু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গোলাম মাওলা তপন, কাউন্সিলর মকবুল হোসেন প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, ৩রা নভেম্বর মানবসভ্যতার ইতিহাসে এক ঘৃণ্য ও কলঙ্কিত দিন। বাঙালি জাতির জীবনে ভয়াল-বীভৎস বেদনাবিধুর কলঙ্কিত জেলহত্যা দিবস। রক্তক্ষরা জেলহত্যা দিবস। বাঙালি জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করতে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্তরীণ জাতীয় চার নেতাকে নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। কারাগারের অভ্যন্তরে এমন বর্বরোচিত হত্যাকান্ড পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। ১৫ আগস্টের মাত্র ২ মাস ২০ দিন পর বাংলাদেশকে পাকিস্তানী ভাবধারায় প্রবাহিত করে দেশের সামগ্রিক অবস্থাকে বিপথে নিতেই কাপুরোষিত এ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের শত্রুরা সেদিন দেশমাতৃকার সেরা সন্তান এই জাতীয় চার নেতাকে শুধু গুলি চালিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, কাপুরুষের মতো গুলিবিদ্ধ দেহকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে একাত্তরের পরাজয়ের জ্বালা মিটিয়েছিল। বাঙালিকে পিছিয়ে দিয়েছিল প্রগতি-সমৃদ্ধির অগ্রমিছিল থেকে। ইতিহাসের এই নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় শুধু বাংলাদেশের মানুষই নয়, স্তম্ভিত হয়েছিল সমগ্র বিশ্ব। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যাকান্ড ছিল একই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা। বিশ্বাসঘাতক খুনিদের পরিকল্পনা, উদ্দেশ্য আজ জাতির সামনে পরিষ্কার।
তিনি বলেন, ৩ নভেম্বরের নৃশংস হত্যাকান্ডের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন সামরিক স্বৈরশাসক খুনি জিয়াউর রহমান। ১৫ আগস্ট থেকে খুনি ফারুক-রশিদ গং এবং খুনি মোশতাকের সমস্ত কর্মকান্ড পরিচালিত হতো জিয়ার নির্দেশ ও তত্ত্বাবধানে। জেল হত্যাকান্ড সংঘটিত হয় খুনি ফারুক-রশিদ, জিয়া-মোশতাকের মিলিত ষড়যন্ত্রে।
তিনি বলেন, জেলহত্যা দিবসকে সামনে রেখে আমাদের সম্মিলিত অঙ্গীকার হোক জাতির পিতার রেখে যাওয়া স্বপ্ন সুখী সমৃদ্ধশালী বৈষম্যহীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র গড়ে তোলা। আর তার সার্থক রূপায়ণ ঘটবে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল আধুনিক উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে।