সিরাজদিখানে মিথ্যা মামলায় কৃষক জেল হাজতে ; মুক্তির দাবীতে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিবেদক
জমিসংক্রান্ত ঘটনায় ভাই ভাই দ্বন্দ্বে ছোট ভাই নুর ইসলামের বিরুদ্ধে বড় ভাই দ্বীন ইসলাম ও ভাবী জোসনা বেগমের দেওয়া একাধিক মামলা মুন্সীগঞ্জ আদালতে চলমান। কিন্তু ২০০৯ সালের কক্সবাজার জেলার একটি নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা এবং নাটোর জেলার ২০১৬ সালের একটি মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানায় নুর ইসলাম এখন জেল হাজতে। ঘটনাটি ঘটেছে মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার কোলা ইউনিয়নের গৌরিপুরা গ্রামের মৃত মনুর উদ্দিন শেখের ২ ছেলের মধ্যে। মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ ও ন্যায্যবিচার দাবীতে ভুক্তভোগী পরিবার গতকাল রবিবার দুপুরে সিরাজদিখান প্রেসক্লাব হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে নুর ইসলামের স্ত্রী ঝুনু বেগম তার বক্তব্যে বলেন, তার স্বামীর বড় ভাইয়ের স্ত্রীর করা ২০৯/২০২২ এর মামলায় গত ২২ জানুয়ারী নুর ইসলাম আদালতে হাজিরা দিলে বিজ্ঞ বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে গত ১২ ফেব্রুয়ারী তিনি জামিন পেয়েও জেলখানা থেকে মুক্ত হতে পারেননি। কারণ নুর ইসলামের বিরুদ্ধে কক্সবাজার জেলার পেকুয়া থানার একটি মানবপাচার মামলায় অন্তবর্তীকালীন গ্রেফতারী পরোয়ানা দেখানো হয়। সংশ্লিষ্ট বিচারক তাকে সে মামলায় জেলখানা থেকে মুক্তি দিতে আদেশ দেন। সেসময় আরো একটি মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানা জেলখানায় পৌঁছায়, সেটি নাটোর জেলা বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের মামলা নং ৫৭২/১৬, যা নলডাঙ্গা থানার মামলা নং ৩৮(১০) ১৩। তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন এমন কোন মামলা নেই বা সেখানে নুর ইসলাম নামে কোন আসামীও নেই। ঝুনু বেগমের দাবী তার স্বামী একজন কৃষক। তিনি কখনো কক্সবাজার বা নাটোর যাননি এবং এমন কোন ঘটনায় জড়িত না। বড় ভাই দ্বীন ইসলাম মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী জোসনা বেগম ভূয়া এসব মামলা দিয়ে তাদের হয়রানি ও ক্ষতি সাধন করছে। তাকে সহযোগিতা করছে তার ভাই আইনজীবী আলাউদ্দিন শেখ ও মেয়ে আইনজীবী প্রিয়াংকা ও ছেলে আইনজীবী জহিরুল ইসলাম প্রিন্সসহ তাদের কিছু লোকজন। ভুক্তভোগী নুরুল ইসলামের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতির জন্য দাবী জানিয়েছেন তার বৃদ্ধ মা জামিলা খাতুন, দুই বোন সায়েরা বেগম, শাহিদা বেগম ও দুই ছেলে মো. জিহাদ, জাহিদুল ইসলাম এবং মেয়ে যুঁথি।
নুরুল ইসলামের আইনজীবী এডভোকেট আবু সাইদ জানান, ভুয়া গ্রেফতারী পরোয়ানা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি এটা খুবই দুঃখজনক। প্রতিপক্ষ ছাড়া এমন কাজ অন্য কেউ করার নয়। কক্সবাজারের মিথ্যা মালায় তিনি জামিন পেয়েছেন। নাটোরের ভুয়া মামলায় তিনি জেল হাজতে আছেন। বিজ্ঞ আদালত ও সংশ্লিষ্টগণ এর সঠিক ব্যবস্থা নিবেন বলে আমি বিশ^াস করি।
ইউপি সদস্যরা জানান, এই ঘটনায় একাধিকবার বসা হয়েছে। কিন্তু তারা কোন কথা শোনে না। নানাভাবে অসহায় পরিবারটিকে হয়রানি করছে জোসনা বেগম ও তার ভাইসহ কয়েকজন মিলে।
প্রতিপক্ষ এডভোকেট প্রিয়াংকা ও এডভোকেট প্রিন্স জানান, আমাদের দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলা চলছে, চাচা নুর ইসলাম গত রবিবার জামিন পেয়েছেন। অন্য মামলার বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। আমরা তাদের কোন প্রকার হয়রানি করছি না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কোলা ইউনিয়ন ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ড মহিলা সদস্য রওসন আরা বেগম, ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ড সদস্য সালমা বেগম, ১নং ওয়ার্ড সদস্য আলমগীর হোসেন, ৮নং ওয়ার্ড সদস্য আবু কালাম, রশুনিয়া ইউপি ৮নং ওয়ার্ড সদস্য জাকির হোসেন, কোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মোঃ শাজাহান প্রমুখ।