নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের ইছাপুরা চৌরাস্তা ব্রীজ সংলগ্ন একটি স’ মিলের অফিস ঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও ৭৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করে প্রতিকার না পেয়ে গতকাল শনিবার সাংবাদিকদের দারস্থ হয়েছেন ভুক্তভোগী মোঃ নাজিম উদ্দিন। তিনি সাংবাদিকদের কাছে মৌখিক অভিযোগ করে বলেন, ২০০৬ সালে কুসুমপুর গ্রামের আব্দুল গফুর চৌধুরীর কাছ থেকে স’ মিল করার জন্য ইছাপুরা চৌরাস্তা ব্রীজ সংলগ্ন পরিত্যক্ত পুকুর ২ হাজার টাকা মাসিক ভাড়া ধার্য করে জায়গার মালিকের অনুমতিক্রমে উক্ত জায়গা ভরাট করে ২০০৮ সালে ভরাটকৃত জায়গায় একটি স’ মিল চালু করেন মোঃ নাজিম উদ্দিন। প্রাথমিকভাবে জায়গাটি ভরাটের বালু ও মাটি বাবদ ২ লক্ষ ১৩ হাজার টাকা চুক্তিপত্রে অগ্রিম হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হয়। তখন জায়গার মালিক গফুর চৌধুরী মৌখিকভাবে বলেন, অতিরিক্ত মাটি ভরাটের খরচের টাকা চুক্তির মেয়াদ শেষে চলে যাওয়ার সময় মোঃ নাজিম উদ্দিনকে ফেরৎ দেওয়া হবে। জায়গার মালিক গফুর চৌধুরীর মৃত্যুর পর তার রেখে যাওয়া সম্পত্তি ছেলেমেয়েদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা হলে স’ মিলের জায়গাটি তার ছেলে সুমন চৌধুরীর ভাগে পড়ে এবং এরপর থেকে সুমন ওই জায়গার ভাড়া বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা ধার্য করে ভাড়াটিয়া মোঃ নাজিম উদ্দিনের কাছ থেকে আদায় করে আসছিলেন। গত ৩০ মার্চ স’ মিলের জায়গা সুমন ছেড়ে দিতে বললে স’ মিলের ৩০ লক্ষ টাকা বাকি আছে মর্মে মোঃ নাজিম উদ্দিন জায়গা ছেড়ে যেতে কিছুদিন সময় চান। কিন্তু জায়গার বর্তমান মালিক সুমন চৌধুরী ভাড়াটিয়া মোঃ নাজিম উদ্দিনকে স’ মিলের মালামালসহ আনুসঙ্গিক জিনিসপত্র সরানোর সময় না দিয়ে দলবল নিয়ে গত ১৮ মে ভাড়াটিয়া মোঃ নাজিম উদ্দিনের অফিস ও ছাপড়া ঘর ভেঙ্গে দিয়ে তার পিতার ওয়ারিশ সম্পত্তির সামনে সরকারী ৪-৫ শতাংশ সম্পত্তি দখল করে তিনি ঘর উত্তোলন করেন। এসময় অফিসে থাকা টিভি, আইপিএস, ব্যাটারী, ৮টি ফ্যান, ২টি পানির পাম্প, ২টি মোটরসহ যাবতীয় মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায় সুমন চৌধুরী ও তার লোকজন। এছাড়া অফিসের ক্যাশবাক্স ভেঙ্গে অর্থকরী ও জরুরী কাগজপত্র লুট করে সুমনের লোকজন। যা পরবর্তীতে সংগ্রহ করা যাবে না। এতে সব মিলিয়ে তার সর্বমোট ৭৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী করা হয়। এ ব্যাপারে সুমনকে বিবাদী করে ভুক্তভোগী মোঃ নাজিম উদ্দিন বাদী হয়ে সিরাজদিখান থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। ওইদিন রাতে সিরাজদিখান থানার এস আই মীর শহিদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে অভিযুক্ত সুমন ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে কোন প্রকার আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ভুক্তভোগী মোঃ নাজিম উদ্দিন সাংবাদিকদের দারস্থ হন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সুমন চৌধুরীর সাথে যোগাযোগের জন্য বারবার তার মুঠোফোনে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ইছাপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মতিন হাওলাদার বলেন, এই ঘটনার ব্যাপারে আমি জানি। কিন্তু সুমন কাজটা খুবই খারাপ করেছে। নাজিম উদ্দিনের বাকি টাকা উঠানোর জন্য অফিসটা রাখা হয়েছিল। এভাবে ভাঙচুর করা ঠিক হয়নি। বিষয়টা খুবই দুঃখজনক। সিরাজদিখান থানার এস আই মীর শহিদ জানান, বিষয়টি সমাধানের জন্য চেয়ারম্যান সাহেব দুইপক্ষকে ডেকেছিলো। একপক্ষ হয়তো তা মানেনাই। এ ব্যাপারে নাজিম উদ্দিন থানায় একটি সাধারণ ডাইরী করেছেন। যেটি আমরা কোর্টে পাঠিয়েছি। পরবর্তীতে বিবাদীদের বিরুদ্ধে কোর্টে প্রসিকিউশন দেওয়া হবে।