নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার পদ্মা নদীর শাখা ও ইছামতি নদী ভাঙ্গন রোধে বাঁধের দাবিতে মানববন্ধন করেন শিলিমপুর তস্তিপুর ভোরন্ডা ইসলামী লাইফ সংগঠন ও স্থানীয় এলাকাবাসী। টঙ্গীবাড়ী উপজেলার আউটশাহী ইউনিয়নের শিলিমপুর,তস্তিপুর, ভোরন্ডাসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষের বসতভিটা, ফসলি জমি, মসজিদ মাদ্রাসা, মন্দির ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝুঁকির মুখে রয়েছে। যেকোন সময় নদীর সাথে বিলীন হয়ে যেতে পারে এসব এলাকার মানুষের বসতবাড়ী, মসজিদ, মন্দির ও সরকারি স্কুল। রোববার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এখানকার মানুষের অনেকের বাড়ী-ঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। তাদেরকে অন্যত্র বাড়ী-ঘর সরিয়ে নিয়ে খোলা আকাশের নীচে বসবাস ও রান্না করতে দেখা যায়। তস্তিপুর গ্রামের অনেকেই বাড়ী-ঘর বিলীন হওয়ার পর খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছে। আবার কেউ অন্য স্থানে ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস করছে। নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধের মাধ্যমে ভাঙন রোধ করে এলাকার অসহায় মানুষের বসতভিটা, মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান, ঈদগাহ, সরকারি স্কুল, মন্দিরসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রক্ষা করার দাবী করেন এলাকাবাসী। তস্তিপুর এলাকার গ্রামবাসী নদী ভাঙনে খুব বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি পরিবারের বাড়ী-ঘর ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে ও কোল্ডস্টোরেজ হুমকির মুখে রয়েছে। উপজেলার তস্তিপুর, মিজানগর, শিলিমপুরসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামে পদ্মা নদীর শাখা ইছামতি নদীর পানি বৃদ্ধি হওয়ায় এসব এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। যে কারণে শত শত পরিবারের বসতভিটা নদীর সাথে বিলীন হয়ে যেতে পারে। তাই তস্তিপুর এলাকার মানুষ দুশ্চিন্তা ও হতাশার মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছে। ইতিমধ্যে তস্তিপুর এলাকায় ৬০টি পরিবারের বসতভিটা নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বলে জানান এলাকাবাসী। তস্তিপুর এলাকার আক্তার শেখ বলেন, নদীর তীব্র স্রোতের কারণে ভেঙ্গে গেছে বসতভিটার সাত শতাংশ বসত ঘর। এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে হয়। অনেক কষ্টে দিন কাটাতে হয়, আমার মতো যেন আর কারও বসতভিটা বিলীন না হয়। মোকলেস ভুঁইয়া বলেন, নদী ভাঙ্গনের মুখে, ভয়ে রাতে ঘুমাতে পারি না। প্রতিনিয়ত ভাঙ্গনের আতঙ্কে দিন-রাত কাটাতে হয়। ভাঙ্গনের শিকার আরেক এলাকাবাসী আফজাল মোল্লা বলেন, গত দুই বছর যাবৎ বর্ষাকাল এলেই আতঙ্কে কাটে আমাদের দিন রাত। এই নদী এলাকার মানুষ অধিকাংশই দিনমজুর, কৃষিজীবি খেটে খাওয়া মানুষ। ইতিমধ্যে নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়েছেন স্থানীয় নাদির ভুঁইয়া, আক্কাস মোল্লা, আকলিমা খাতুন, শেখ মোহাম্মদ, আক্তার হোসেন, ফজলুল হক। এলাকাবাসীর দাবি, এখানে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে ভাঙ্গন রোধ করা। এ বিষয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন তারা। ঢাকা বিভাগের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, ইতিমধ্যে টঙ্গীবাড়ী উপজেলার কয়েকটি জায়গায় ভাঙন রোধে কাজ চলমান রেখেছি। তবে সরজমিনে গিয়ে কাজের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।