নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার গাঁওদিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন স্থানে প্রধান সড়ক দখল করে গাংচিল পরিবহনের বাস পার্কিং করে। খিদিরপাড়া ইউনিয়ন ক্ষেতেরপাড়া থেকে বৌলতলী রাস্তায় গাড়ি পার্কিংয়ের অভিযোগ তুলেছে এলাকাবাসী। পরিবহন শ্রমিকেরা ভয়ে নাম প্রকাশে করতে চায় না অনেকেই। তবে তাদের অভিযোগ যৌক্তিক। রাস্তায় গাড়ি চলাচলের জন্য, দীর্ঘদিন পার্কিংয়ের জন্য নয়। বালিগাঁও থেকে ঢাকা প্রায় ৫২ কিলোমিটার। যাত্রীদের ভাড়াও গুনতে হয় ৯০ টাকা। বিভিন্ন কোম্পানির পুরনো গাড়ি কিনে রঙ করে ঝকঝকে তকতকে বানিয়ে গাংচিল পরিবহন নামে দেয়া হয়। সড়ক পথে বিমানের ছোঁয়া তাদের পরিবহনে লিখে সড়ক দাপিয়ে বেড়ালেও যাত্রী সেবার বালাই নেই। অথচ এই রুটে মাসে কমপক্ষে কোটি টাকার বাণিজ্য করছে এই পরিবহন সংস্থাটি। লৌহজংবাসী গাংচিল পরিবহনের হয়রানির শিকার হচ্ছে। আসন পূর্ণ করার নামে পুরো রাস্তায় যাত্রী ওঠানো হচ্ছে। ঢাকা থেকে লৌহজংয়ে যাতায়াতকারী যাত্রীদের এই পরিবহন নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। তারা জানায়, একরকম বাধ্য হয়ে গাংচিল পরিবহনে যাতায়াত করতে হয়। বিকল্প না থাকায় গাংচিল পরিবহনের যন্ত্রণা নিয়ে যাত্রীদের আসা-যাওয়া করতে হয়। লৌহজং উপজেলায় অন্য কোন বেসরকারী পরিবহন না থাকায় গাংচিল পরিবহনের যাত্রীদের সেবার মান শূন্যের কোটায় পৌঁছেছে।
এছাড়া গাংচিল পরিবহনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। মূলত মুন্সীগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ এই গাংচিল পরিবহনের মূল নিয়ন্ত্রক। এটি জয়েন্ট স্টক কোম্পানিভুক্ত। প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা প্রর্যন্ত ৩০ থেকে ৪০টি গাড়ি বালিগাঁও থেকে ঢাকা এবং ঢাকা থেকে বালিগাঁওয়ে চলাচল করে। উপজেলা হাসপাতাল রোড ঘৌলতলী, হাটভোগদিয়া, বালিগাঁও ব্যস্ত প্রধান সড়কগুলোর উপরে গাংচিল পরিবহন রাখার ভোগান্তি হাজার হাজার মানুষের। রাস্তার উপর বেপরোয়াভাবে গাড়ি রাখার কারণে দিন দিন বেড়েই চলছে দূর্ঘটনা। যানজট লেগেই আছে প্রতিদিন। জরুরী রোগী এবং লাশবাহী পরিবহনও বাদ যাচ্ছে না। প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গ অনেকেই এখান দিয়ে আসা যাওয়া করে কিন্তু তাদের নীরবতায় প্রশ্ন তুলছে সচেতন মহলের অনেকেই।
এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. রুহুল আমিন মোড়লের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, গাড়ি কোথায় রাখবো আমরা? তার কাছে জানতে চাওয়া হয় রাস্তায় পার্কিংয়ে রাখলে সাধারণ মানুষসহ অনেকের অসুবিধা হয়। তিনি জানান এটা কোন ব্যাপার না। সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন তালুকদার জানান তিনি অসুস্থ থাকায় কথা বলতে অসুবিধা হয়।
নাম প্রকাশে অনুচ্ছক অনেকেই বলেন, দিন দিন বেড়েই চলছে যানজট ও দূর্ঘটনা। মানুষ কার কাছে গিয়ে বলবে এই প্রশ্ন থেকেই যায়। লৌহজং উপজেলাবাসী এ বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ ও সুদৃষ্টি দেয়ার বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন।
লৌহজং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল আউয়াল এ বিষয়ে বলেন, আমি অনেকসময় এ পথে চলাচল করি। দেখেছি কিছু বাস রাস্তা দখল করে পার্কিং করেছে। আমি সড়ক ও জনপথ বিভাগে এ বিষয়ে অনেক আগেই জানিয়েছি।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপপ্রকৌশলী ফাহিম রহমান বলেন, আমি পরিবহন সমিতিকে রাস্তায় গাড়ি না রাখার জন্য বলেছি। তারা গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা তৈরি করে গাড়ি রাখবে বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে আমি দ্রুতগতিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। সড়ক দখল করে পার্কিংয়ের কোন সুযোগ নাই।