মুন্সীগঞ্জ জেলা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রার্থীদের পক্ষে ফেস্টুন ও ব্যানার শোভা পাচ্ছে
নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদের নির্বাচনে নারী-পুরুষ প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় বর্তমানে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের বাকি আরো কয়েকদিন। আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদের নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীরা প্রচার আর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে সমান তালে। মুন্সীগঞ্জ জেলা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রার্থীদের পক্ষে ফেস্টুন ও ব্যানার শোভা পাচ্ছে। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীরা ভোট প্রার্থনায় ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন। একটি ভোটের জন্য তারা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটাররাও এবার শক্ত কৌশলে রয়েছে।
জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জ সদরের ৫নং ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১৪৪ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার হচ্ছে ১০৯ জন। আর নারী ভোটার সংখ্যা ৩৫ জন। এবারের জেলা পরিষদের নির্বাচনে আসন কিংবা ওয়ার্ডে অনেকটাই পরিবর্তন আনা হয়েছে। এতে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা হচ্ছে ৫নং ওয়ার্ড। এ উপজেলায় একটি সদস্য পদের বিপরীতে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হচ্ছেন চরকেওয়ার ইউপি চেয়ারম্যান ও মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আফসার উদ্দিন ভুইয়ার পুত্র এবং দৈনিক রজত রেখা পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক মাহমুদুল হাসান সাদি ভূইয়া। তার প্রতীক হচ্ছে হাতি। চরকেওয়ার ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ আক্তারুজ্জামান জীবন। তার প্রতীক হচ্ছে তালা। মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও ছাত্রনেতা মোঃ আরিফুর রহমান আরিফ। তার প্রতীক হচ্ছে টিউবওয়েল। এখানকার সদরে ৫নং ওয়ার্ডে এবারের নির্বাচন ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনাই বেশি হবে বলে এখানকার ভোটাররা মনে করছেন। তবে অনেক ভোটারের দাবি হচ্ছে এ নির্বাচন দ্বিমুখী লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। সেই হিসেবে মাহমুদুল হাসান সাদি ও আক্তারুজ্জামান জীবনের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনী লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে কোন কোন ভোটাররা অভিমত প্রকাশ করেছেন। তবে এ দুই প্রার্থীই চরকেওয়ার ইউনিয়নের সন্তান। আবার অনেক ভোটারের অভিমত হচ্ছে যে, নানা কারণে এ নির্বাচনে মাহমুদুল হাসান সাদি ভূইয়ার নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে, যা অন্য কোন প্রার্থীর নেই। কারণ সদরে চরকেওয়ার ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ আফসার উদ্দিন ভূইয়া। তাতে নির্বাচনী সমীকরণে ভোট যুদ্ধে মাহমুদুল হাসান সাদি ভূইয়া হচ্ছে তরুণ মুখ এবারের নির্বাচনে। কিন্তু পিছিয়ে নেই হেভিওয়েট প্রার্থী সাবেক ছাত্রনেতা ও সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য মোঃ আরিফুর রহমান আরিফ মুন্সীগঞ্জ সদরের মধ্যে কোর্টগাঁয়ের সন্তান। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে আরিফুর রহমান আরিফ। একটা বিশাল ফ্যাক্টর হিসেবে রয়েছে আরিফ। কারণ সাধারণ জনগণের কাছে ইতিমধ্যে বেশ গুঞ্জন রয়েছে। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে চরাঞ্চলের গ্রামের সাধারণ জনগণ বলছে, চরকেওয়ারে বর্ষীয়ান ও সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ জীবন ও বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ চরকেওয়ারে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ আফছার উদ্দিন ভূইয়ার পুত্র মাহমুদুল হাসান সাদি ভূইয়া এই দুই প্রার্থীর মধ্যে ভোটের রেষারেষিতে হয়তো আবারও বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে ছাত্রনেতা আরিফুর রহমান আরিফের।
এদিকে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা, টঙ্গীবাড়ী উপজেলা ও গজারিয়া উপজেলার এ ৩টিকে নিয়ে জেলা পরিষদের নারী ওয়ার্ড ২ গঠিত হয়েছে। এখানে ৩ জন নারী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হচ্ছেন- জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মোরশেদা বেগম লিপি। মোরশেদা বেগম লিপি হচ্ছেন সাবেক শহর আওয়ামী লীগের তুখোড় নেতা এস এম মাহাতাব উদ্দিন কল্লোলের সহধর্মিণী। তার প্রতীক হচ্ছে বই। এবারও জয়ের সম্ভাবনায় এগিয়ে রয়েছে এই নারী হেভিওয়েট প্রার্থী লিপি। এ নির্বাচনে নতুন মুখ এডভোকেট সালমা বেগম। তার প্রতীক দোয়াত কলম। তিনিও প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। নির্বাচনে নতুন মুখ আকলিমা আক্তার। তার প্রতীক ফুটবল। মোর্শেদা বেগম লিপি ও সালমা হচ্ছেন মুন্সীগঞ্জ সদরের সন্তান। আর আকলিমা আক্তার হচ্ছেন টঙ্গীবাড়ীর সন্তান। এ নির্বাচনে নারী ওয়ার্ডে মোর্শেদা বেগম লিপি ও আকলিমা আক্তারের ভোটের মাঠে লড়াই হবে বলে ভোটাররা মনে করছেন। তবে এ নির্বাচনে জয়ের পাল্লা অনেকটাই ভারী হচ্ছে লিপির দিকে। প্রার্থীরা ও ভোটাররা বলছে সবাই অনেক আশা দিচ্ছে ভোট দিবে আসলে কে যে কার আর কে যে কোথায় ভোট দিবে সেটা বুঝে ওঠা মুশকিল হয়ে উঠেছে।