নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার বাঘড়া বাজারে গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন বহুতল মার্কেট নির্মাণ কাজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। পাইলিং কাজে অতি ছোট সাইজের (রাবিস) পাথর ও ময়লাযুক্ত সিলেকশন বালু ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের (জিওবি) স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ২ কোটি ৫৬ লাখ ৫২ হাজার টাকা চুক্তিমূল্যে মার্কেট নির্মাণের কাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স শাহাবুদ্দিন ট্রেডিং। এই কোম্পানীর কর্ণধার একই জেলার পার্শ্ববর্তী লৌহজং উপজেলার আক্তার হোসেন খান লাবু। আর কাজটির তদারকির দায়িত্বে আছেন শ্রীনগর উপজেলার এলজিইডির সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী কার্যালয়। সরকারের কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন মার্কেটটির গুরুত্বপূর্ণ পাইলিংয়ের কাজের শুরুতেই অনিয়মের অভিযোগ উঠায় কাজের মান নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। গত বছরের জুলাই মাসে বাঘড়া বাজারে মার্কেট নির্মাণ কাজ শুরু করার কথা থাকলেও কিছুদিন আগে মার্কেটের পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়। চুক্তি অনুসারে আগামী জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা।
স্থানীয়রা জানায়, নিম্নমানের এসব উপকরণ সামগ্রী নির্মাণ কাজে ব্যবহার করায় বাজারের দোকানিরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। শুনেছি কিছুদিন আগে উপজেলা প্রকৌশলী সাইড পরিদর্শনে গিয়ে এসব নিম্নমানের পাথর ও নিচুমানের উপকরণ সামগ্রী এ কাজে ব্যবহার করতে নিষেধ করার পরেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কোন কথা শুনছেন না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মার্কেট নির্মাণ কাজে পাইলিং কর্মযজ্ঞ চলছে। শ্রমিকরা মাটিযুক্ত রাবিস পাথর ও সিলেকশন বালুর সমন্বয়ে সিমেন্টের সংমিশ্রণ করে পাইলিংয়ের কাজ করছে। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে ঠিকাদারের লোকজন তাড়াহুড়ো করে এসে মাটিযুক্ত রাবিস পাথরের স্তুপে পানি দেওয়া শুরু করে। এছাড়া কাজের সাইডে প্রকল্পের বিবরণীর সাইনবোর্ড টাঙানোর কথা থাকলেও তা দেখা যায়নি। এসময় উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের কার্য-সহকারী বাবলু তদারকির কাজে উপস্থিত ছিলেন। নিম্নমানের পাথর ও বালু ব্যবহারের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি নিশ্চুপ থাকেন। এসময় ঠিকাদার আক্তার হোসাইন খান লাবুর ছোট ভাই মো. আতাউর রহমান খান সামনে এগিয়ে আসেন। তিনি বলেন, পাথর যেখান থেকে কেনা হয়েছে বিক্রেতারা ছোট সাইজের পাথর দিয়েছে। আর কয়েক মাস ধরে এখানে পাথর রাখায় তাতে ধূলাবালি জমেছে। এগুলো রাবিস পাথর না। নির্মাণ সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় এ কাজে আমরা প্রায় ৪০ লাখ টাকা লোকসানে পড়বো। প্রকল্পের বিবরণীর সাইনবোর্ড না টাঙানোর বিষয়ে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে সাইনবোর্ড লাগিয়েছিলাম তা বাতাসে উড়ে গেছে। দুই-একদিনের মধ্যে আবার সাইনবোর্ড টাঙাবো। এখানে সিডিউল অনুসারেই কাজ করা হচ্ছে। কাজ কিভাবে করব আমি সব জানি। আমার মাথা গরম আছে। কথা কম বলেন।
শ্রীনগর উপজেলা প্রকৌশলী মো. মহিফুল ইসলামের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে ঠিকাদারকে নিম্নমানের ওই পাথরগুলো কাজে ব্যবহারের জন্য নিষেধ করে এসেছি। এখনই খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।